🔺️🔺️আইনের বিধি ভেঙে পুলিশ কোর্টে তলব করে গ্রেপ্তার দুই অভিযুক্তকে। সরাসরি আইন লঙ্ঘন করে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে খোদ শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের বিরুদ্ধে!১০৭সিআরপিসি ধারায় গ্রেপ্তারিতে বেনিয়মের অভিযোগ উঠছে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের বিরুদ্ধে
শিলিগুড়ি। আইনের বিধি ভেঙে পুলিশ কোর্টে তলব করে গ্রেপ্তার দুই অভিযুক্তকে। সরাসরি আইন লঙ্ঘন করে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে খোদ শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের বিরুদ্ধে!১০৭সিআরপিসি ধারায় গ্রেপ্তারিতে বেনিয়মের অভিযোগ উঠছে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের বিরুদ্ধে। শিলিগুড়ির আইনজীবী মহলের বক্তব্য সিআরপিসি ১০৭ ধারায় বাউন ডাউনে ডাকা হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনা পুলিশ। সেখানে কিভাবে আইনি নির্দেশিকা ভেঙ্গে শিলিগুড়ি পুলিশ কোর্টে ডেকে গ্রেপ্তার করা হলো শিলিগুড়ি কমিশনারেটের তরফে? শিলিগুড়ি কমিশনারেটের মাল্লাগুড়ির পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বিরুদ্ধে আইন হাতে নিয়ে গুচ্ছের অ-নিয়মের অভিযোগ সামনে এসেছে। সম্প্রতি শিলিগুড়ি পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে দুই অভিযুক্ত নিশীথ অগরওয়াল এবং অভিষেক ভরদ্বাজকে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা এবং এলাকার শান্তি বিঘ্নিত করার অভিযোগে কমিশনারেটের তরফে ১০৭ সিআরপিসি ধারায় তলব করে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি কমিশনারেটের ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ কোর্টে দুই দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয় দুই অভিযুক্তকে। আর এই নির্দেশের পরই শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের বিরুদ্ধে আইনি বিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে।উল্লেখ হিল কার্ট রোডের নিশীথ আগরওয়াল এর বিরুদ্ধে জমি দখল পার্কিং ঘিরে দখলদারি এবং এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে অভিষেক ভরতদ্বাজের বিরুদ্ধে তার প্রধাননগরে চলা হোটেলের বেআইনি কাজকর্ম ঘিরে এলাকার শান্তি বিঘ্নিত করার অভিযোগ। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিক ডিসিপি হেডকোয়াটার জয় টুডুর বক্তব্য জনস্বার্থে দুজনের বিরুদ্ধে ১০৭ সিআরাপিসিতে নোটিস করা হয়। আর এখানেই জট, আইনে বলছে কোনভাবেই আইনি ধারা ১০৭ সিআরপিসিতে কাউকে গ্রেফতারির পরোয়ানা পেশ করা যাবে না। পুলিশ কমিশনারেটের তরফে স্পেশ্যাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ করে আইন নিজ হাতে নিয়ে নয়া নিয়ম জারি করা হয়েছে কমিশনারেটের ভেতর পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে। সেখানে কমিশনারেটের ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ কোর্টে বেইল বন্ড স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে আইনজীবীদের পরিবর্তে আধিকারিক স্থাণীয় গ্যাজেটেট অফিসার বা শিক্ষকদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আসলে কি এই নতুন নিয়ম? শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের তরফে নিয়ম জারি করা হয়েছে অভিযুক্তের হয়ে স্বাক্ষরিত বেইল বন্ড দিতে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পেশ করতে পারবে একমাত্র আধিকারিক স্থানীয় গ্যাজেটেট অফিসার এবং শিক্ষকেরা।ফলত আইনজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যের সমস্ত ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ কোর্টে নিয়ম অনুসারে বেইল বন্ড পেশ করে এলেও শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের নতুন নিয়মে তাতে বাঁধ সাধা হয়েছে। অথচ ১০৭ সিআরপিসি ধারার ক্ষেত্রে এমন নিয়ম এ রাজ্যের কোথাও নেই।
আইনজীবীদের বড় অংশের অভিযোগ এই নির্দেশিকা সম্পূর্ণ বেআইনি। আইনের রক্ষক হয়ে পুলিশ কমিশনারেটের এই নির্দেশিকা সরাসরি আইন ও সংবিধানকে লঙ্ঘন করছে। এতে পুলিশ কমিশনারেটের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তুলছেন আইনজীবীরা। আইনজীবীদের অভিযোগ- এর ফলে আধিকারিক স্থানীয় গ্যাজেটেট অফিসার ও শিক্ষকেরা বেইল বন্ড বাবদ ২-৫হাজারের পরিবর্তে অভিযুক্ত মক্কেলের কাছে মোটা টাকা চেয়ে বসছেন। একএকটি বেইল বন্ড বাবদ ১০-২০হাজার টাকা দাবি করছেন আধিকারিক স্থানীয় গ্যাজেটেট অফিসার ও শিক্ষকেরা। আইনজীবী শম্পা দত্ত জানান- আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। ১০৭সিআরপিসিতে গ্রেপ্তারির পরোয়ানা জারি করা যায় না। গ্রেপ্তার করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে আইপিসির নির্দিষ্ট ধারায় অভিযুুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে গ্রেপ্তার করতে হবে।সেখানে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়ারে এডমিনিষ্ট্রেটিভ পুলিশ ওভার রিয়েএক্টিং করছেন। যা সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারে আঘাত হানছে। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে দরখাস্ত করা যেতে পারে।
ভারতীয় সংবিধানের আইনের ঘরে সঠিকভাবে আত্ম পক্ষ সমর্থনের অধিকার সকলের রয়েছে। অথচ সেখানে মোটা টাকা দাবি করায় অভিযুক্তরা জামিনের আর্জিই পেশ করতে পারছেন না। পুলিশের তরফে ওই গ্যাজেটেড অফিসারদের কাছে বেইল বন্ড স্বাক্ষরে বাধ্যও করা হচ্ছে অভিযুক্তদের বলেও অভিযোগ উঠে আসছে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি হেডকোয়াটার জয় টুডু জানান বিগত সময়তে ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ কোর্টে এ ধরনের রায় বা নির্দেশ কখন দেওয়া হয়নি। দুই অভিযুক্তের গ্রেফতারি ও জেল হেফাজতের বিষয় নিয়ে তিনি বলেন-
এমন নির্দেশ এর আগে হয়নি। এই নির্দেশ বিরল। এর আগে ওই দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে লোয়ার আদালতে (শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে) মামলা হয়েছিল সেখানে দুই অভিযুক্তই জামিনে মুক্তি পায়। অর্থাৎ আদালতের নির্দেশের পরও পুনরায় ওই দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ কোর্ট। বৃহস্পতিবার ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ কোর্ট দুই অভিযুক্তের দু দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। শনিবার হেফাজতের সময়সীমা শেষে তাদের জামিন মঞ্জুর করেছে ম্যাজিস্ট্রেট।