বিহার গ্যাংয়ের এটিএম প্রতরনা চক্রের নজরে শিলিগুড়ি। চারমাস ধরে শিলিগুড়ির সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল ধুরন্ধর বিহারের অপরাধী গ্যাং। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি থেকে বিহারের চার সদস্যের দুষ্কৃতী গ্যাং গ্রেপ্তার। কায়দায় বদল এনে এটিএম কার্ড ক্লোন করে হাফিস লক্ষ লক্ষ টাকা
শিলিগুড়ি। বিহার গ্যাংয়ের এটিএম প্রতরনা চক্রের নজরে শিলিগুড়ি। শিলিগুড়িতে এটিএম ক্লোনিং চক্রের হদিশ। চারমাস ধরে শিলিগুড়ির সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল ধুরন্ধর বিহারের অপরাধী গ্যাং। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি থেকে বিহারের চার সদস্যের দুষ্কৃতী গ্যাং গ্রেপ্তার। শহরে সমস্ত থানায় এল্যার্ট জারি করে ব্যাংক প্রতারণা থেকে এটিএম থেকে টাকা হাফিসের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সে সূত্র ধরেই শহরের কত টাকার লুঠ রাজ চালিয়েছে এই গ্যাং সে ধোঁয়াশা কাটবে।
এটিএমের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিদের সাহায্যের নাম করে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তাদের এটিএম কার্ডের যাবতীয় তথ্য লুফে নেয় বিহারের প্রতারণা গ্যাংয়ের দুষ্কৃতিরা। গ্যাংয়ের তিন সদস্য শিলিগুড়িতে গাঁ ঢাকা দেয়। শিলিগুড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে বিহার পুলিশ।বছর ঘুরতে না ঘুরতেই এবারে বিহারের দুষ্কৃতী গ্যাংঙে নিশানা করে শিলিগুড়িকে। বাগডোগরার বাসিন্দা কৌশিক দত্তের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত নেমে মঙ্গলবার বিহার গ্যাঙের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম গোপাল কুমার (৩২), রিচু কুমার(২৪), চন্দন কুমার(১৮), ধনঞ্জয় কুমার (২৮)। ধৃতরা প্রত্যেকেই বিহারের বাসিন্দা। এদিন এনজেপি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় চারজনকে। তাদের হেফাজত থেকে একটি চারচাকা বিলাসবহুল গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানান শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের এসসিপি শুভেন্দর কুমার। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের এসিপি শুভেন্দর কুমার সাংবাদিক বৈঠক করে দিন বলেন গত আগস্ট মাসে ২৩তারিখ বাগডোগরা থানার অন্তর্গত হাঁসখোয়া নিবাসী কৌশিক দত্ত নামে এক ব্যক্তির এটিএম কার্ড নিয়ে শয়তান নামে এক লক্ষ ৯২হাজার টাকা হরফ করা হয়। সিনেমার কায়দায় নাটকীয় ভঙ্গিতে এই পুরো কার্যকলাপ চালায় দুষ্কৃতি গ্যাং। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে কৌশিক দত্ত অভিযোগ করে জানান ঘটনার দিন বাগডোগড়া বিহার মোড়ের একটি এটিএম যন্ত্রে টাকা তোলার জন্য এটিএম কার্ডটি ঢোকালে তা আটকে যায়। কিছুতেই ওই এটিএম কার্ড বের করতে পারছিলেন না ব্যক্তি। সে সময় দুইজন অজ্ঞাত পরিচয় দেখতে এসে তাকে একটি নম্বর দিয়ে বলেন এটি হেল্পলাইন নাম্বার সেই নম্বরে ফোন করলেই মিলবে সমাধান। দুই ব্যক্তি কথায় ভরসা করে তাদের দেওয়ান হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করেন ব্যক্তি। এরপরই ওই দুষ্কৃতি গ্যাংয়ের সদস্যরা তাকে বলেন ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে তারপরই বেরিয়ে আসবে কার্ড। এর কিছুক্ষনের মধ্যেই এটিএম কক্ষ ছেড়ে চলে বেরিয়ে যান তারা। এরপরই অভিযোগকারীর মোবাইলে মেসেজ আসে তার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় দুই লক্ষ টাকা হাফিস হয়ে গিয়েছে। ব্যক্তির একাউন্ট থেকে একটি অজানা অ্যাকাউন্ট নম্বরে এই মোটা অংকের টাকা স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এরপরই কুল কিনারা হারিয়ে বাগডোগড়া থানার পুলিশের কাছে পুরো বিষয়টি জানিয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে থানার তদন্ত কারী পুলিশ আধিকারিক খগেন বর্মন ঘটনায় তদন্ত শুরু করে।তদন্তে উঠে আসে গ্যাংয়ের বিষয়টিও। তবে ওই গ্যাং ক্রমাগত এলাকা বদল করে আড়ালে থেকেই এই সম্পূর্ণ গতিবিধি চালিয়ে যাচ্ছিল। গ্যাংয়ের গতিবিধির ওপর নজর ছিল পুলিশের।
এদিন গোপন সূত্রে পুলিশের কাছে খবর পৌছায় শিলিগুড়ি এনজেপি এলাকায় রয়েছে ওই গ্যাং। অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় গ্যাংয়ের চার সদস্যকে। ধৃতদের হরফাজত থেকে চারচাক গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। শিলিগুড়ির আরও কোনো ব্যক্তি এটিএম কার্ড ক্লোনিং প্রতারণার চক্রের শিকার হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ মিনি এটিএম কার্ড রিডার যন্ত্রও রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান মিনি ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ কার্ড রিডার যন্ত্রের মাধ্যমে ব্যক্তির এটিএম কার্ড স্যুয়াইপ করে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে তৈরি করে ফেলা হতো ক্লোন কার্ড তা পুলিশের নজরে থাকায় ধরনে বদল এনেছে দুষ্কৃতীরা। এসিপি শুভেন্দর কুমার জানান মূলত গার্ড বিহীন এটিএম গুলিকে নজরে রেখে সেখানে ওঠ পেতে থাকে গ্যাংয়ের সদস্যরা। এরপর বয়স্ক কিংবা এটিএম ব্যবহারে সরগর নয় এমন ব্যক্তিরাই তাদের নজরে থাকে। মূলত এটিএমের কার্ড মেশিনের মাধ্যমে ক্লোন করে যাবতীয় তথ্য হাতিয়ে নেয় তারা। ভুয়ো হেল্প লাইন নাম্বার দিয়ে বিভ্রান্ত করে পুরো বিষয়টি নির্দিষ্ট কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে পরিকল্পনা মাফিক চালানো হয়। ধৃতদের বুধবার শিলিগুড়ি আদালতে পেশ করে সে গ্যাঙয়ের সঙ্গে কে বা কারা জড়িত রয়েছে সে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।