ভরা শ্রাবনে শিবের মাথায় জল ঢালার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লো ১০ পুণ্যার্থী কিশোর, সারি সারি পুণ্যার্থী কিশোরের মৃতদেহ ঘিরে শুধুই আর্তনাদ চ্যাংড়াবান্ধা হাসপাতালে।

ভক্তের ডাক পৌঁছনোর আগেই মর্মান্তিক পরিণতি! ভরা শ্রাবনে জল্পেশ যাত্রায় মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লো ১০ পুণ্যার্থী কিশোর। কোচবিহার জেলার শীতল কুচি থেকে পিক আপ ভ্যানে ডিজে বক্স জেনারেটর নিয়ে ৩৬ জনের একটি দল রওনা দেয় জল্পেশ মন্দিরের উদ্দেশ্যে। গভীর রাতে চ্যাংড়াবান্ধার ধরনা সেতু পার হতেই ভয়ঙ্কর ঘটনা!

🔺ঠিক কি হয়েছিল?জানা যাচ্ছে গাড়িতে থাকা একাধিক ডিজে বক্স ও জেনারেটর থেকে শর্ট সার্কিট হয়। গাড়িতে বসে থাকা কিশোরদের সচল শরীর স্থবির হয়ে যায়। অস্বাভাবিক যন্ত্রনা হতে থাকে শরীরে। বেগতিক বুঝতে পেরেই গাড়ির চালক গাড়ি থামিয়ে দেন। গাড়ি থেকে লাফিয়ে নেমেও পড়েন বেশ কয়েকজন। তবে শেষ রক্ষা হলো না। নিমেষে গাড়িতে থাকা কিশোরদের হাত পা বিদ্যুতের তীব্রতায় বিকল হয়ে পড়ে। চোখের সামনে  গাড়িতে থাকা পরপর তরতাজা কিশোরদের শরীর নিথর দেহে পরিনত হয়। তড়িঘড়ি চ্যাংড়াবান্ধা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় কিশোরদের। হাসপাতালে চিকিৎসকেরা ১০ জনকে মৃত বলে জানিয়ে দেয়। আহত আরও ১৪জনের বেশি। আহতরা জানাচ্ছেন চোখের সামনেই স্থবির হয়ে পড়ে ওরা। নিজেরা বেঁচে যান কোনোমতে। তবে ঘটনায় শারীরিক ও মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ রূপে ভেঙে পড়েছেন আহত কিশোরেরা। তাই কিভাবে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ঘটে সে বিষয়ে কিছুই বলে উঠতে পারছে না। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন মানসিক ট্রমায় রয়েছেন আহতরা। কোচবিহার পুলিশের সূত্রে জানা গিয়েছে এই পুণ্যার্থীদের বাড়ি কোচবিহারের শীতলকুচি এলাকায়। এদের প্রায় সকলেরই বয়স ১৬ থেকে ১৭-র মধ্যে। ঘটনায় নিহত হয়েছে শুভঙ্কর বর্মন, স্বপন বর্মন, বাদল বর্মন, বিশাল তিরকি, বিভাষ বর্মন, বিক্রম বৈশ্য, বাপি বর্মন, লক্ষণ বর্মন, মানব বর্মন ও সুশান্ত বর্মন। ঘটনায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে উত্তরবঙ্গ জুড়ে।

(সারি সারি পূর্ণার্থীদের মৃতদেহ)

ওই গাড়িতে মোট ৩৬জনের একটি দল জল্পেশের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। তাদের পিকআপ ভ্যানে ছিল জেনারেটর, একাধিক ডিজে বক্স। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে উঠে আসছে টানা বৃষ্টিতে গাড়িতে থাকা জেনারেটর যন্ত্র ও বৈদ্যুতিক সামগ্রীতে জল পড়তে লাগে। গরমের কারনে একসময় গাড়ির উপরের পলিথিনের হুড খুলে দেওয়া হয়। যার জেরে সরাসরি বৃষ্টির জল পড়ে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামে। ডিজে বক্স ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের সরাসরি সংস্পর্শে ছিলেন যারা তাদের তৎক্ষণাৎ মৃত্যু ঘটেছে। ঘটনার পরই গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সোমবারই কোচবিহারে এসে পৌঁছচ্ছেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
তবে এই ঘটনার পর একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে বিবেচক মহল থেকে-

🔺হাইকোর্টের নির্দেশে ডিজে বক্স নিষিদ্ধ করা হয়েছে রাজ্যে। তারপরও শ্রাবন মাসে অধিকাংশ পুণ্যার্থীদের গাড়িতেই জেনারেটরের সাহায্যে বিপজ্জনকভাবে চলছে ডিজে বক্স নিয়ে যাত্রা।

🔺একইসঙ্গে বহু পুণ্যার্থীদের গাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডারও মজুদ করে যাত্রা করা হয়। যাতে যেকোন সময় বড় দূর্ঘটনায় আশঙ্কা থেকেই যায়।
এই সমস্ত বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন আগেভাগে সজাগ হলে বড় বিপত্তি এড়ানো সম্ভব বলেই মনে করছে বিবেচক মহল।

Content Protection by DMCA.com

8 thoughts on “ভরা শ্রাবনে জল্পেশ যাত্রায় মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লো ১০ পুণ্যার্থী কিশোর, পুণ্যার্থীদের মৃত্যুতে উঠছে একাধিক প্রশ্ন!

  1. Pingback: cialis mg 5

Comments are closed.