অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা পৌঁছতে দার্জিলিং শিলিগুড়ি মহকুমার ব্লকে ব্লকে তুমুল উন্মাদনা। চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে দার্জিলিং জেলা তৃণমূল।
শিলিগুড়ি। নির্বাচনী প্রচারে শেষ লগ্নে শিলিগুড়িতে রাজনৈতিক পারদ চড়ছে। ময়নাগুড়ির দুর্ঘটনার পর থেকেই টানা উত্তরবঙ্গে মাটি আঁকড়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। সে সময়তে শিলিগুড়ি এলেও দূর্গতদের দেখতে ছুটে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনী প্রচার সভা করার সুযোগ থাকলেও সেসময় দূর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সমস্ত কিছু পর্যবেক্ষণ ও তৎপরতাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেন তিনি। সে সময় শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে অসুস্থ্য দুই শিশুকে দেখতে এসেই বলে গিয়েছিলেন আগে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যাক সকলে তারপর সভা করবো। মানুষ থাকলে নির্বাচন হবে। সেমত বিধ্বস্ত জমিনে পুনরায় টিন ইট কাঠ জুড়ে গড়ার কাজ শুরু হয়েছে ময়নাগুড়িতে। সেমত অবস্থা ফিরতেই দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীর প্রচারে আসতে চলেছেন তৃনমূল সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নকশালবাড়ি এক গোসাইপুর অঞ্চলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসতে চলেছেন। সেখানে উত্তরা ময়দানে জনসভা রয়েছে তার।
২৩শে এপ্রিল জনসভা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। জনসভা পৌঁছতেই দার্জিলিং পাহাড় সহ শিলিগুড়ি মহকুমার ব্লকে ব্লকে তুমুল উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়ে। চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে দার্জিলিং জেলা তৃণমূলে। এই জনসভাকে কেন্দ্র করে ব্লকে ব্লকে সমর্থক থেকে সাধারণের মধ্যে উন্মাদনা
তুমূলে। রবিবার দার্জিলিং জেলা তৃণমূল হিলকার্ট রোডের দলীয় জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন দার্জিলিঙ জেলা তৃনমূল সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ চেয়ারম্যান অলক চক্রবর্ত্তি, রঞ্জন সরকার সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা। তারা জানান শিলিগুড়ি শহর ও শিলিগুড়ি মহকুমার চার ব্লক থেকে মূলত জনসভার সমর্থকরা আসবেন। গ্রামীন মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য এই অঞ্চলকে বাছাই করা হয়েছে। পাহাড় থেকে নেতৃত্ব এবং প্রতিনিধিরা উপস্থিত হবেন জনসভায় বলে জানান দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ। তিনি বলেন মূলত দার্জিলিং জেলার সমতলকে কেন্দ্র করেই শীর্ষ নেতৃত্ব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নির্বাচনী প্রচার। ইতিমধ্যেই ময়দানে সভাস্থল দফায় দফায় পর্যবেক্ষণ করছেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূল নেতৃত্বরা। সভাস্থল সরেজমিনেপর্যবেক্ষণ করে মেয়র গৌতম দেব চেয়ারম্যান অলক চক্রবর্তীর সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ। জেলা সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ জানান- তোরজোড়ের সঙ্গে প্রস্তুতি চলছে। প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার মানুষের জমায়েত বিশাল জনসভা হবে। ব্লকে ব্লকে এই সভায় যোগ দিতে মানুষের মধ্যে প্রবল উন্মাদনা দেখা যাচ্ছে। তবে নির্বাচন থাকার কারণে বিভিন্ন ব্লক থেকে যাতায়াতের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বাসের সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে তৃণমূলকে। নির্বাচনী কাজে সমস্ত বাস চলে যাওয়ায় দূর দূরান্তের ব্লক থেকে অসংখ্য মানুষকে আনতে পর্যাপ্ত সংখ্যক বাস মিলছে না। দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন আমরা বিষয়টি দেখছি গাড়ি না পেলেও পায়ে হেঁটে হলেই সেখানে পৌঁছবে সমর্থকরা। দুপুর ১২টায় হবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা। তিনি বলেন গোপাল আমাকে দিল্লির লোকসভা কক্ষে পৌঁছে দিতে হবে। মুখপাত্র বেদব্রত দত্ত বলেন কেন্দ্র সরকারের এই সময়তে রাজনীতির ডিকশনারিতে দুটো শব্দ যুক্ত হয়েছে এক হচ্ছে ফেক গ্যারান্টি অন্যটি ঝুমলা। মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বঞ্চনার বিরুদ্ধে এদিন জনসভা থেকে বলবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেতৃত্বরা জানান যদিও বছরের বিভিন্ন সময় আমাদের দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নেতৃত্ব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়ান। এবারেও গোপাল লামাকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করে দিল্লির মসনদে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে মানুষকে আবেদন জানাতে এই জনসভা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও ভাজপা সাংসদ প্রার্থী রাজু বিস্তা রিং রোড থেকে যানজট, গোর্খাল্যান্ড গল্পের গরু গাছে তুলে দেন বারবার। এদিকে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তোলেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূল নেতৃত্বরা। তাদের দাবি যেভাবে ফ্ল্যাট ফেস্টুন ব্যানার সরকারি জায়গায় বিজেপি লাগিয়ে যাচ্ছে, একের পর এক নির্বাচনের নিয়ম ভেঙ্গেও কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। জেলা সভানেত্রী বলেন রাতের অন্ধকারে তৃণমূলের কখনো দলীয় ঝান্ডা পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, তৃণমূলের ব্যানার পোস্টারে বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দিয়ে তারা কখনো নেত্রীর মুখে পদ্মের স্টিকার লাগিয়ে দিচ্ছেন আবার কখনো কালী লিপস্টিক এ ধরনের মানসিক বিকৃতিমূলক কাজ কর্ম করছেন। নির্বাচন কমিশন কে অভিযোগ জানানোর পরও একাধিক অভিযোগে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। বিজেপি নেতারা নির্বাচন কমিশনকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। সম্প্রতি প্রথম পর্যায়ে নির্বাচনের দিনে ভাজপা বিধায়িকা নির্বাচনী নিয়ম ভেঙ্গে যে তাণ্ডব চালিয়েছেন তারপরও কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় এটা পরিষ্কার নির্বাচন কমিশনকে হাতে নিয়ে কাজ করছে বিজেপি। দার্জিলিং জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব রঞ্জন সরকার বলেন বিজেপির একের পর এক অনৈতিক আচরণ প্রমাণ করে দিচ্ছে উত্তরবঙ্গের মালদা দুটো জেলা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছেনা না। বাকি উত্তরবঙ্গের সবকটি জেলায় ছয়টি আসন উত্তরে তৃণমূল পেতে চলেছে।