উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ে হানা সিবিআইয়ের। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস চত্ত্বরে দিনভর উপাচার্য্য ডঃ সুবিরেশ ভট্টাচার্য এর বাংলো ও বিশ্ব বিদ্যালয়ে তাঁর প্রশাসনিক দপ্তরে তল্লাশী। সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত টানা ৯ঘন্টার সিবিআই অধিকর্তাদের টানা জেরা উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য্যকে।
শিলিগুড়ি। উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ে হানা সিবিআইয়ের। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস চত্ত্বরে দিনভর উপাচার্য্য ডঃ সুবিরেশ ভট্টাচার্য এর বাংলো ও বিশ্ব বিদ্যালয়ে তাঁর প্রশাসনিক দপ্তরে তল্লাশী। সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত টানা ৯ঘন্টার সিবিআই অধিকর্তাদের টানা জেরার মুখে উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য্যকে। বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগের অনুসন্ধান কমিটির রিপোর্টে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য তৎকালীন এসএসসি চেয়ারম্যান ডঃ সুবিরেশ ভট্টাচার্যের নাম উল্লেখ্য করা হয়। ২০১৪-২০১৮সাল পর্যন্ত এসএসসি চেয়ারম্যান পদে আসীন ছিলেন তিনি। ২০১৮ এর ২৩শে ফেব্রুয়ারি তিনি উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য্য পদে যোগ দেন। সে সময়কালে (২০১৪-১৮) এসএসসিতে অনৈতিক ভাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে ৩৮১ জনকে সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয় বাগ কমিটির রিপোর্টে। আদালতের নির্দেশে সেই কয়েকশো অনৈতিক নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় সিবিআইকে। সে রিপোর্ট এর ভিত্তিতেই বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ সিবিআই হানা দেয় উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। সরাসরি বিশ্ব বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকা উপাচার্য্যের সরকারি বাংলোতে হানা দেয় সিবিআইয়ের ১১সদস্যের একটি কমিটি। জানা গিয়েছে এদিন সকাল ৮টা নাগাদ ডঃ
সুবীরেশ ভট্টাচার্য্যের বাঁশদ্রোনির ফ্ল্যাট সিল করা হয় কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে। এদিকে সিবিআইয়ের কলকাতার দপ্তর থেকে অধিকারীকদের দল পৌছায় উত্তরবঙ্গে। হাকিমপাড়ার সিবিআই-এর দপ্তর সংলগ্ন এলাকা থেকে দুটি ভাড়ার গাড়িতে সিবিআইয়ের শিলিগুড়ির স্থানীয় দুই অফিসারকে নিয়ে বিশ্ব বিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে পৌছায় দলটি। ১১জনের সিবিআইয়ের দলটি প্রথমে ক্যাম্পাসের উপাচার্য্যের বাসভবনে হানা দেয়। সেখানে থেকে দুটি দলে বিভক্ত হয়ে
উপাচার্য্যকে হেফাজতে নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ভেতরে পাঁচ সদস্যের একটি দল প্রবেশ করে। সেখান থেকে যাতে কোনোভাবেই বাইরে কোনো খবরাখবর না পৌছয় তা নিশ্চিত করতে বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দপ্তরের কর্মীদের মোবাইল সিবিআই কর্তারা নিজেদের হেফাজতে নেয়। বাইরে থেকে প্রশাসনিক ভবনে ভেতরে কাউকেই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি এদিন দিনভর। উল্টো দিকে একইসঙ্গে সিবিআইয়ের ছয়-সাতজনের দল ক্যাম্পাসের উপাচার্য্য এর সরকারি বাংলোতে তন্নতন্ন করে তল্লাশী চালায়।বাসভবনে উপাচার্য্য ও তার স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন এদিন। লাগাতার সিবিআই আধিকারিকেরা জিজ্ঞাসাবাদ চালায় উপাচার্য্য তথা প্রাক্তণ এসএসসি চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য্যকে। উপাচার্য্যের বাসভবনে দায়িত্বে থাকা সিকিউরিটি গার্ড জানান সকাল বেলা ১০-১২জনের দল গাড়ি নিয়ে মুখ্য গেটের সামনে এসে জানায় তারা সিবিআই থেকে এসেছে। এরপর বাংলোর ভেতরে চলে যান তারা। আধ ঘন্টা পর কয়েকজন বেরিয়ে দপ্তরের দিকে যান।
এদিকে প্রশাসনিক দপ্তরে সিবিআইয়ের টিমটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়েন্ট রেজিস্টার স্বপন কুমার রক্ষিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলেও জানা গিয়েছে। দপ্তরে একাধিক নথি ও তথ্য খতিয়ে দেখেন তারা। নয় ঘন্টা দপ্তর ও বাংলোতে বসে উপাচার্য্যকে জেরার পর সন্ধ্যা ৬.৪০নাগাদ দুটি গাড়িতে বেরিয়ে যায় এগারো জনের সিবিআই আধিকারিকদের দলটি।
উপাচার্য্যের বাংলো থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে সিবিআই কর্তারা জানান আমাদের কোনোরকম মন্তব্য পেশের অনুমতি নেই। অপরদিকে সিবিআই-এর দিনভর জেরার মুখে বিশ্ব বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পঠন পাঠন ও কাজকর্ম বিগ্নিত হয়। পড়ুয়াদের মধ্যেও থমথমে ভাব লক্ষ্য করা যায়। এদিকে দিনভর সিবিআই আধিকারিকদের জেরার পর সন্ধ্যার নাগাদ বাংলো থেকে কিছুক্ষনের জন্য বাইরে বেরোতে দেখা যায় উপাচার্য্যকে।
২০-২৫মিনিট পর তিনি ফের বাসভবনে ফিরে আসেন। প্রসঙ্গত বাগ কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় এসএসসিতে ৩৮১জনের অনৈতিক নিয়োগ হয়েছে। এরমধ্যে ২২২জন লিখিত পরীক্ষায় পাশ করেনি। অংশ নেয়নি পার্সোনালিটি টেস্টে। ১৬০জনের র্যাঙ্ক মেরিট তালিকায় এগিয়ে এনে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এসএসসি-র চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়তে এসএসসি রুল ১৩ ব্রেকের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যাতে চাকুরীপ্রার্থীর মেরিট তালিকায় শুধুমাত্র প্রার্থীই নিজে তার র্যাঙ্ক দেখতে পেতেন।
39 thoughts on “উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ে হানা সিবিআইয়ের।তন্নতন্ন করে তল্লাশী উপাচার্য্যের বাংলো দপ্তরে”
Comments are closed.