শিলিগুড়ি

ফের উত্তরবঙ্গে এসআইআরকে কেন্দ্র করে আত্মঘাতী চা বলয়ের মহিলা বিএলও-র,উদ্বেগ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

ফের উত্তরবঙ্গে এসআইআরকে কেন্দ্র করে প্রাণ বলি চা বলয়ের অঙ্গনওয়াড়ি মহিলা কর্মীর। বাংলা পড়তে ও লিখতে সমস্যা, ফর্মে কি লেখা রয়েছে বুঝতে পারছি না সে কথা জানিয়ে কাজের অব্যাহতি চাইলেও মেলেনি রেহাই। পাল্টা চাপিয়ে দেওয়া হয় পর্যায়ক্রমে কাজের ভার। নির্বাচন কমিশনের অস্বাভাবিক মানসিক চাপের মুখে বাড়ির উঠোনে আত্মঘাতী মহিলা।আত্মঘাতী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী আদিবাসী মহিলার নাম শান্তিমুনি এক্কা।

 

শিলিগুড়ি।ফের উত্তরবঙ্গে এসআইআরকে কেন্দ্র করে প্রাণ বলি চা বলয়ের বিএলও অঙ্গনওয়াড়ি মহিলা কর্মীর। নির্বাচন কমিশনের অস্বাভাবিক মানসিক চাপের মুখে বাড়ির উঠোনে আত্মঘাতী মহিলা বিএলও।বাংলা পড়তে ও লিখতে সমস্যা, ফর্মে কি লেখা রয়েছে বুঝতে পারছি না সে কথা জানিয়ে কাজের অব্যাহতি চাইলেও মেলেনি রেহাই। আত্মঘাতী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী আদিবাসী মহিলার নাম শান্তিমুনি এক্কা (৪৮)। এসআইআর কাজের জটিলতা ঘিরে প্রথম থেকেই সমস্যায় পড়তে হয় স্বল্প শিক্ষিতা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী মহিলার। কাজের জেরে ভয়ঙ্কর মানসিক চাপের মুখে হেরে গিয়ে আত্মহননে রাস্তা বেছে নিলেন আদিবাসী মহিলা। মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষি জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার ব্লকের রাঙামাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের নিউ গ্ল্যাংকো চা বাগান এলাকা।ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে ডুয়ার্সের চা বলয়। মালবাজার থানার রাঙামাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের নিউ গ্ল্যাংকো চা বাগান এলাকার বাসিন্দা মৃতা মহিলা। জানা গিয়েছে,এসআইআরের কাজ ও আবেদন পত্রের ধোয়াশা ঘিরে প্রতিদিন সমস্যার মুখে পড়তে হয় চা শ্রমিক পরিবারের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী মহিলাকে। সঠিকভাবে নির্দিষ্ট সময় নিয়ে নির্বাচন কমিশনের তরফে প্রশিক্ষণ সম্ভব না হওয়ার কারনে কাজ করতে গিয়ে নিত্য সমস্যার মুখে পড়তে হতো। বাগানের বাসিন্দাদের ক্রমাগত প্রশ্নের মুখে সঠিক প্রশিক্ষনের অভাবে সমাধানে রাস্তা বল সম্ভব হতো না। তারওপর অত্যধিক কাজের চাপ। একদিকে পুরোপুরি ভাবে বাংলা বুঝতে পারতেন না আদিবাসী মহিলা, লেখার ক্ষেত্রেও ছিল সমস্যা। তার ছেলে ডি সুজ্জা এক্কা জানায় মা পুরোপুরি ভাবে বাংলা পড়তে ও লিখতে জানতো না। সে কথা প্রথমেই জানানো হয়েছিল ব্লক নির্বাচন কমিশনের আধিকারীকদের তা সত্ত্বেও এই কাজ চাপিয়ে দেওয়া হয়। যার জেরে একদিকে প্রবল কাজের চাপ অন্যদিকে বুথের বাসিন্দাদের প্রশ্নের উত্তর ও সহযোগীতা করতে সমস্যা।হচ্ছিল তার। মানসিক অবসাদে ভুগছিল।প্রতিনিয়ত সমস্যার মুখে ব্লকের অ্যাসিস্ট্যান্ট বিডিও তথা ব্লকের নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে গিয়ে শারীরিক ও মানসিক স্থিতির কথা জানিয়ে কাজ থেকে অব্যাহতির আর্জি জানান। তবে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে মেলেনি অব্যাহতি। যার ফলস্বরুপ আত্মহত্যার রাস্তা বেছে নিতে হলো অসহায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে। স্বামী সুখু এক্কা বলেন আমরা স্ত্রী সামান্য অঙ্গনওয়াড়িতে শিশুদের দেখভাল করতো। বাংলা ভাষা পড়তে ও লিখতে সরগর নয় সে। এসআইআরের অস্বাভাবিক কাজের চাপে নাওয়া খাওয়া ভুলে যায় সে। আর পেরে উঠলো না। কাজটা থেকে অব্যাহতি মিললে আজ প্রাণ টা এভাবে দিতে হতো না। বুধবার নিজ বাড়ির উঠোনে শান্তিমুনি দেবীর গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের সদস্যদের চোখে পড়ে এরপরই আর্ত চিৎকারে ছুটে আসে প্রতিবেশীরা।রাজ্য আদিবাসী কল্যাণ বিভাগীয় মন্ত্রী তথা মালবাজার বিধায়ক বুলু চিক বড়াইক খবর মেলার পরই মৃতার বাড়িতে ছুটে যায়। তিনি বলেন এসআইআর বিভীষিকা হয়ে উঠেছে। উত্তরবঙ্গে পরপর প্রাণহানির ঘটনা সামনে উঠে আসছে। রাজ্য জুড়ে মৃত্যু মিছিল। তিনি বাংলা লিখতে পড়তে ভালোভাবে জানতেন না তারপরও বিএলও অত্যধিক দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয়। কাজের চাপে একটা মহিলা বিএলও-র মৃত্যু হলো। গোটা পরিবার নষ্ট হলো। এই মৃত্যুর দায় নির্বাচন কমিশনের। আমরা বিচার চাই। এই মৃত্যুর দায় নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও উদ্বেগ প্রকাশ করে গভীর শোক প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্ৰীর পোস্ট ভাগ করে নিয়ে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব জানান- অপরিকল্পিত আনপ্ল্যান্ড স্যার কাজের চাপ মানুষের প্রাণ নিচ্ছে।আজ মাল ব্লকের জলপাইগুড়িতে আরেকজন বিএলও মারা গিয়েছেন।ইসিআই-এর অবশ্যই দ্রুত হস্তক্ষেপ করে এই বিপদজ্জনক অভিযানটি অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।মালবাজার ব্লক প্রশাসনের তরফে বিডিও রশ্মিদীপ্ত বিশ্বাস এদিন ঘটনার পর মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। যদিও কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।