🔻🔻শিলিগুড়িতে বিনা লাইসেন্সে রমরমিয়ে চলা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হানা দিয়ে কড়া ব্যবস্থা স্বাস্থ্য দপ্তরের। বাড়ির রান্নাঘরের একাংশে পরিকাঠামোহীনভাবে অনুমোদন ছাড়া বেআইনিভাবে চলা ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিল করল স্বাস্থ্য দপ্তরের টিম অভিযানে নেমে।শহরজুড়ে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের টিমের অভিযানে সাতটি ডায়গনস্টিক সেন্টার পলি ক্লিনিকের বিরুদ্ধে কড়া নোটিশ জারি। সিল বেসরকারি হাসপাতালও
শিলিগুড়ি। শিলিগুড়িতে বিনা লাইসেন্সে রমরমিয়ে চলা বেআইনী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হানা স্বাস্থ্য দপ্তরের।বাড়ির রান্নাঘরের একাংশেই চলছে পরিকাঠামোহীনভাবে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমোদন ছাড়া রুগী শয্যা রেখে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। নেই ল্যাব চালুর কোনোরকম লাইসেন্স, বেআইনিভাবে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সীমানা পাঁচিলের গাঁ ঘেঁষে চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলা ল্যাবে তালা ঝুলিয়ে সিল করলো জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।
স্বাস্থ্য দপ্তরের অভিযানে বৃহস্পতিবার একদিনে শিলিগুড়ির সাতটি পলি ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে নোটিশ ধরালো জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে তালা ঝুলেছে শিলিগুড়ি শহরের বেসরকারি হাসপাতালেও,চলতি মাসে শহরজুড়ে একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ১৭-১৮ টি বেআইনী পলিক্লিনিক ডায়াগোনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। বানিজ্যিক শহর শিলিগুড়ির জন্য বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী উপমা বোধহয় ভুল হবে না! আর বিশেষত এই বানিজ্যিক শহর বেশ কয়েক বছরে স্বাস্থ্য পরিসেবার ক্ষেত্রে হেলথ হাব হয়ে উঠেছে, আশপাশের জেলার সঙ্গে প্রতিবেশী রাজ্য বিহার, সিকিম এমনকি প্রতিবেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে প্রায় সম্পূর্ণ রূপে শিলিগুড়ি শহরের উপর নির্ভরশীল। আর সে কারণে চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শহর জুড়ে সারি সারি বেসরকারি হাসপাতাল, ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্যাথলজিক্যাল ল্যাব। বিভিন্ন মহল থেকে দীর্ঘ সময় যাবৎ শহরের বুকে গজিয়ে ওঠা ডায়াগোনস্টিক সেন্টার,প্যাথ ল্যাব গুলির বৈধতা ও পরিকাঠামো নিয়ে গুচ্ছের অভিযোগ উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের সিএমওএইচ-এর টিমের অভিযানে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সীমানা প্রাচিলের গা লাগোয়া একটি বেআইনি ডায়াগোনস্টিক সেন্টারে চলা চূড়ান্ত অব্যবস্থার ভয়াবহ ছবি সামনে উঠে আসে।
দেখা যায় বিনা লাইসেন্স বেআইনিভাবে চলছে রমরমিয়ে সারি সারি রুগী নিয়ে ল্যাব। সিএমওএইচ একের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য দপ্তরের টিম হানা দিতেই পালিয়ে যেতে বলা হয় রুগী ও রুগী পরিজনেদের। টিমের অভিযানে দেখা যায় বাড়ির রান্না ঘরের এককোণে রুগী শয্যা রেখে চলছে ল্যাবে শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা। রান্নাঘরে একাংশে টেবিলের উপর রাখা চিকিৎসা সরঞ্জাম। স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট লাইসেন্স প্রয়োজন, অথচ ওসব নিয়মের তোয়াক্কা না করে পাড়ার মুদির দোকানের ধাঁচে বেআইনিভাবে বিনা লাইসেন্স চলছে ডায়াগনস্টিক। জানা গিয়েছে, পাঁচ ছয় মাস ধরে এই বেআইনি ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলছে। অভিযানে নানা অজুহাত দেখালেও জানা যায় বাড়ির মহিলা রিংকু রায়ের নামে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার তা দাবি করলেও স্বাস্থ্য দপ্তরে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জন্য লাইসেন্সের আবেদনই করেনি মালিকপক্ষ। এদিন স্বাস্থ্য দপ্তরের পাঁচ সদস্যের টিম অভিযানে সুশ্রুতনগর এলাকার মেডিকেলের প্রাচিল ঘেঁষে থাকা স্বাস্থ্য দপ্তরে অনুমোদন ছাড়া বেআইনী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হানাদারি চালিয়ে সিল করা হয়।
স্বাস্থ্য বিধি শিকেয় তুলে রক্ত থেকে যাবতিয় রুগীর মল, মূত্র সিমেন মোটা টাকার বিনিময়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রুগীদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হতো বেআইনি ল্যাবের জাল রিপোর্ট। দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে মালিকের বিরুদ্ধে কড়া আইনানুগ নোটিশ জারি করে জয়গুরু ডায়াগনস্টিক সেন্টারটিতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দার্জিলিং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারীক ডাঃ তুলসী প্রামানিক জানান- চলতি মাসে ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালিয়ে ১৭-১৮টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার পলি-ক্লিনিককে নোটিশ করা হয়েছে। শিলিগুড়ি শহরে একটি বেসরকারি হাসপাতালকেও স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশিকা লংঘন করায় সিল করা হয়েছে। এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল। সে মত অভিযান চালিয়ে সিল করা হয় সেন্টারটি।
একইসঙ্গে এদিন শিলিগুড়ি পাকুরতলা মোড়, পাঞ্জাবি পাড়া, প্রধান নগর, নিবেদিতা রোডে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে একাধিক পলি ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ডেন্টাল ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে লাইসেন্স সহ পরিকাঠামো পর্যবেক্ষণ করে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সাতটির বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করা হয়েছে। এরমধ্যে শিলিগুড়ি শহর জুড়ে এদিন জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের টিমের অভিযানে চারটি পলি ক্লিনিক ও ডেন্টাল ক্লিনিক এবং দুটি প্যাথলজি ল্যাবের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য দপ্তরে স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশিকা না মানায় নোটিশ করা হয়। এছাড়া বেশ কিছু ক্লিনিকের খামতি চিহ্নিত করে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।



