🔺🔺রেল দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ১০। শিলিগুড়ির কাছে ফাঁসিদেওয়া ব্লকের রাঙাপানিতে অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা রেল দুর্ঘটনায় ক্রমশ হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে।রাত ভর উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে দেশ ও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রেল দুর্ঘটনায় আহত নিহতদের পরিবারের পরিজনেরা ছুটে আসছেন। মালগাড়ি চালকের দেহ দলা পাকিয়ে কেবিনের চেয়ারে আটকে পড়ে। পোশাক ছিন্নবিচ্ছিন্ন।নিথর দেহে হাত ছিল স্ট্রিয়ারিংয়ে সেই মৃত চালকের ওপর দায় চাপাতে ব্যস্ত রেল!
শিলিগুড়ি।রেল দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ১০। শিলিগুড়ির কাছে ফাঁসিদেওয়া ব্লকের রাঙাপানিতে অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা রেল দুর্ঘটনায় ক্রমশ হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে।রাত ভর উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে দেশ ও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রেল দুর্ঘটনায় আহত নিহতদের পরিবারের পরিজনেরা ছুটে আসছেন। মেডিকেল চত্বরজুড়ে শুধুই আর্তনাদ। নিহতদের মধ্যে ৭জনকে শনাক্ত করেছে তাদের পরিবারের সদস্যরা। নিহতদের নাম ওসি এক্সাইজে কার্যরত সেলেব সুব্বা,রেলের মালগাড়ির লোকো পাইলট অনিল কুমার(৪৬), কাঞ্চনজঙ্গার গার্ড আশীষ দে (৪৭),বর্ধমান নিবাসী মহিলা বিউটি বেগম, কলকাতা গড়িয়াহাটের বাসিন্দা শুভজিৎ মালি,কাঁকুরগাছি কলকাতার নিবাসী শঙ্কর মোহন দাস ও মেডিকেলের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে মৃত্যু হয় বিজয় রায়ের। আরও তিনজনের দেহ এদিন রাত পর্যন্ত শনাক্ত হয়নি। পরিজনেরা ক্রমশ উৎকন্ঠা নিয়ে মেডিকেল চত্ত্বরে ছুটে আসছে। মর্গে দেহ শনাক্ত করে কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ছে আবার এ যাত্রায় মৃতদের মুখের ঢাকা সরিয়ে পরিচিত যোগ না মেলায় বড় ভাগ্যক্রমে পরিজনের প্রাণ রক্ষা হয়েছে সে ভাবনায় ঈশ্বরকে ডাকছেন।এদিকে ঘটনায় যে লোকো পাইলটের ওপর গাফিলতির দায় চাপাতে ব্যস্ত রেল। সেই লোকো পাইলটের দলা পাকানো দেহ উদ্ধার হয়।নিজ পাইলটের চেয়ারে দায়িত্বে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন বস্ত্র ও বিধ্বস্ত নিথর দেহটি দলা পাকানো অবস্থায় উদ্ধার হয়। মালগাড়ি লোকো সজোরে দাঁড়িয়ে থাকা কাঞ্চনঝঙ্গায় ধাক্কা মারে। মূলত সোমবার ভোর থেকে রেলের সিগন্যাল গোলমালের কারনেই এই সমস্যা।ম্যানুয়াল মেমো ৯১২নিয়ে একই লাইনে অত্যন্ত ধীর গতিতে দাঁড়িয়ে পড়ার অবস্থায় কাঞ্চনজঙ্গার লাইনে ঢুকে পড়ে পেছন থেকে ধাক্কা মারে।সিগন্যাল বাতিল হয়ে যায়। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বে রাঙ্গাপানির নির্মলজোত গ্রামে ৬৫২নম্বর পিলারের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ২৫০মিটার দূরত্ব পর্যন্ত ছিটকে যায় কামরা গুলি। রেল আরপিএফের নামার আগেই উদ্ধার কার্যে নামা স্থানীয় যুবকেরা জানায় মালগাড়ি চালকের দেহ দলা পাকিয়ে কেবিনের চেয়ারে আটকে পড়ে। পোশাক ছিন্নবিচ্ছিন্ন।তার নিথর দেহ দলা পাকিয়ে কামরায় লোকো পাইলট আসনে জড়িয়ে ছিল। কোনরকমে টেনে হিঁচড়ে গ্যাস কাটার দিয়ে বের করে আনা হয়। নিউজলপাইগুড়ি এলাকার বাসিন্দা ছিল অনিল কুমার। এদিন তার ডিউটি ছিল না। তবে রোটেশনের কারনে অন্যের পরিবর্তে যেতে হয় তাকে। আর এরপরই সব শেষ!নিহত অ্যাসিটেন্ট লোকো পাইলটও। এদিকে ওসি এক্সয়াইজের পদে শিলিগুড়িতে মালদা পোস্টিং নিয়ে চাকুরীর জয়েনিংয়ে যাচ্ছিলেন সেলেব সুব্বা। তবে আবগারি বিভাগের ওসির নতুন গন্তব্যে আর চাকরিতে যোগ দেওয়া হলো না! ট্রেনের জেনারেল কামরায় ছিলেন তিনি। দুর্ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। রবিবার রাতে স্ত্রীর সঙ্গে প্রেমের পর্বের গানে মেতেছিলেন অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্গা এক্সপ্রেসের গার্ড আশীষ দে। তবে এর যে কোনোদিন সুর মেলানো হবেনা তা বোধহয় দুঃস্বপ্নেও ভাবেনি পরিবার। এদিন বাড়িতে ডিমভাজা করে খোশ মেজাজে কাজে গিয়েছিলেন তিনি। রোটেশন পরিবর্তন হওয়াতেই কাঞ্চনজঙ্গায় গার্ড-এর দায়িত্বে যেতে হয়। রেলের দুর্ঘটনার খবর শুনেই বুক তড়িঘড়ি ফোন লাগিয়েছিলেন স্বামীকে স্ত্রী। ফোন না লমেলায় বুক কেঁপে ওঠে স্ত্রীর। তবে তা আশঙ্কা যে জীবনের সীমানা টেনে দিলো তা জানতে পারেন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল দেহ ঢুকতেই। দপ্তরীয় ভাবে রেল ও জেলা প্রশাসন ৮জন মৃত তা জানিয়েছে। রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত জানান বিজয় রায় বামে এক ব্যক্তি মেডিকেলের ট্রমা কেয়ারে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শারীরিক স্থিতির অবনতি হওয়ায় মৃত্যু হয়েছে। এদিকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন দেহাংশ উদ্ধার হয় রেলের দল পাকিয়ে যাওয়া কামড়া থেকে। যার পরিচয় মেলেনি। বা পায়ের থেকে একটি মাংসপিন্ড আকারে দেহাংশ উদ্ধার করে মর্গে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।