সাত দশক পর রাজ্যে বিরল কস্তুরী মৃগের দেখা নেওড়াভ্যালিতে
শিলিগুড়ি। প্রায় সাত দশকের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আবারও রাজ্যের অরণ্যে দেখা মিলেছে বিপন্ন কস্তুরী মৃগের। নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩,১১২ মিটার উচ্চতায় বসানো ট্র্যাপ ক্যামেরায় সম্প্রতি ধরা পড়ে এই বিরল প্রাণীর চলাফেরা। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় সমীক্ষায় নাম দার্জিলিং নেওড়াভ্যালির। রাতের অন্ধকারে ইনফ্রারেড লেন্সে ধরা পড়ে। কয়েক সেকেন্ডের দৃশ্য মুহূর্তেই উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে বন দফতর এবং বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।১৯৫৫ সালে দার্জিলিংয়ের সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানে শেষবার কস্তুরী মৃগকে দেখা গিয়েছিল। সেই সময় থেকেই এই প্রজাতির হরিণের অস্তিত্ব বিপন্ন। অনেকে ধরে নিয়েছিলেন যে কস্তুরী মৃগ রাজ্য থেকে প্রায় বিলুপ্ত। পাহাড়ি অরণ্যের এই সংরক্ষণশীল প্রাণীর উপস্থিতি নতুন করে আশার আলো সঞ্চার করেছে। ঘন জঙ্গল, দুর্গম ঢালু পাহাড় ও নীরব পরিবেশ এদের আবাসস্থল। তাছাড়া চোরা শিকারিদের হাতে বছরের পর বছর কস্তুরী গ্রন্থির জন্য নির্বিচার শিকার সংখ্যাবৃদ্ধির পথে বড় বাধা হয়ে ওঠে।সেই পটভূমিতে এতদিন পর এই প্রজাতির উপস্থিতি ধরা পড়া নিঃসন্দেহে এক বড় সাফল্য। বন দফতরের আধিকারিকদের মতে, ট্র্যাপ ক্যামেরায় পাওয়া ছবি শুধু কস্তুরী মৃগের অস্তিত্ব নিশ্চিতই করছে না, বরং নেওড়াভ্যালির পার্বত্য পরিবেশ যে এখনও এদের জন্য উপযোগী তাও প্রমাণ করছে। আগামী দিনে আরও বিস্তৃত সমীক্ষার মাধ্যমে এদের সম্ভাব্য আবাসভূমি এবং প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয়ে গবেষণা বাড়ানো হবে।
এছাড়াও চোরা শিকার রোধ, নীরব অঞ্চল সংরক্ষণ, পর্যটন নিয়ন্ত্রণসহ একাধিক সংরক্ষণমূলক পদক্ষেপ আরও জোরদার করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের মতে, কস্তুরী মৃগের এই পুনর আবির্ভাব রাজ্যের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আশাব্যঞ্জক বার্তা বয়ে এনেছে। এটি কেবল একটি প্রজাতির প্রত্যাবর্তন নয়, বরং রাজ্য বন দপ্তরের পাহাড়ি অরণ্যের পরিবেশগত ভারসাম্য সঠিক রয়েছে তারই প্রমান।



