আন্তঃজাল মারফৎ ভ্যারচুয়াল মধুচক্রের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বশান্ত সরকারি অ্যাসিস্ট্যান্ট সিভিল ইঞ্জিনিয়ার।২৭লক্ষ টাকা খুঁইয়ে অভিযোগ সাইবার থানায়। ভার্চুয়াল আন্তজাল মারফত মধুচক্রের প্রলোভন দেখিয়ে ব্যক্তির অশ্লিল ভিডিও ফুটেজ তৈরী করে স্ত্রী ও আত্মীয়দের মোবাইলে সে ভিডিও পাঠানোর হুমকি দিয়ে মোটা টাকা আদায়
শিলিগুড়ি। আন্তঃজাল মারফৎ ভ্যারচুয়াল মধুচক্রের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বশান্ত সরকারি অ্যাসিস্ট্যান্ট সিভিল ইঞ্জিনিয়ার।২৭লক্ষ টাকা খুঁইয়ে অভিযোগ সাইবার থানায়। ভার্চুয়াল আন্তজাল মারফত মধুচক্রের প্রলোভন দেখিয়ে ব্যক্তির অশ্লিল ভিডিও ফুটেজ তৈরী করে স্ত্রী ও আত্মীয়দের মোবাইলে সে ভিডিও পাঠানোর হুমকি দিয়ে মোটা টাকা আদায়। ২৭ লক্ষ টাকা আদায় করে লাগাতার ব্যাকমেইল ফ্রডস্টারদের। ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি পুরনিগমের রবীন্দ্রনগর এলাকার এক সরকারি এসিস্ট্যান্ট সিভিল ইন্জিনিয়ারের সঙ্গে। রাজ্য সরকারের এমইডি বিভাগে চাকুরীরত এসিস্ট্যান্ট সাব ইঞ্জিনিয়ার পদে নিযুক্ত ওই ব্যক্তি। ঘটনার সূত্রপাত গত মে মাসের ১০ই মে। জানা গিয়েছে, ঘটনার বেশ কিছুদিন আগে থেকে একাধিক নম্বর থেকে তার মোবাইলে ফোন আসতে শুরু করে। আন্তজাল মারফত ভার্চুয়াল মধুচক্রের পাতা ফাঁদে জড়িয়ে পড়েন সরকারি দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার। মোবাইলে সরাসরি ভিডিও কলের মাধ্যমে অশ্লীল ভিডিওতে যুক্ত করা হয় ব্যক্তিকে। এরপর ভার্চুয়াল সে অশ্লীল ভিডিও কলের স্ক্রিন রেকর্ড করে নেয় ফ্রড স্টারেরা।
এরপরই গত বছর ২০২৩সালের ১০ই মে ওই অশ্লীল ভিডিও ফুটেজ এবং কিছু ছবি গ্রাহক ইঞ্জিনিয়ার কে পাঠিয়ে ক্রমাগত প্রতারণা কারীরা কয়েক লক্ষ টাকার দাবি করেন। ইঞ্জিনিয়ারকে রীতিমতো ব্ল্যাকমেইল করা হয় যদি তিনি দাবির বড় অংকের ওই টাকা প্রতারকদের হাতে তুলে না দেন তাহলে তার অশ্লীল ভিডিও ফুটেজ তার স্ত্রী এবং অন্যান্য আত্মীয় পরিজনদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সামাজিক মাধ্যম থেকে ইঞ্জিনিয়ারের ফ্রেন্ডলিস্ট ও যোগাযোগের তালিকা কব্জা করে নেয় ফ্রড স্টারেরা। সম্মানহানির ভয়ে কিছুটা সময় চেয়ে তাদের কথামতো ধাপে ধাপে দশমাসের মধ্যে ১৭লাখ৩৭হাজার ৪৮৮ টাকা দেন ওই ইঞ্জিনিয়ার। ইঞ্জিনিয়ারের অভিযোগ একযোগে এতগুলো টাকা তার একার একাউন্ট থেকে দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় বিভিন্ন পরিচিত এবং সহকর্মীদের একাউন্ট থেকে সেই টাকা স্থানান্তরিত করেন তিনি। সাত দফায় মোট ১৭ লক্ষ ৩৭হাজার টাকা স্থানান্তরিত করা হয় প্রতারকদের নির্দেশমতো বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে। এরপরই এক সহকর্মী পরামর্শে চলতি মাসের ২রা জুলাই প্রথম শিলিগুড়ি সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা আদায়ের। পুলিশ কর্মীদের পরামর্শে নিজের ফোন নম্বর বদলে নেন ব্যক্তি। তবে তাতেও নিস্তার মেলেনি। ওই ইঞ্জিনিয়ার এর নতুন নম্বরে ক্রমাগত একাধিক নাম্বার থেকে ফোন আসতে শুরু করে। ক্রমাগত ফের চাপ দিতে লাগেন সাইবার ফ্রডস্টারদের একাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন পরিচয়ে। ব্যক্তির অভিযোগ করিমপুর নিবাসী বিকাশ ভগত বলে এক ব্যক্তি তার পরিচয় দেয়। পাশাপাশি অপর এক ব্যক্তি ময়ুরইয়াহো নিজেকে ভুয়ো ডিএসপি পরিচয় দিয়ে সরকারী দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে ফোনে নিজের প্রভাব পরিচয় দেখিয়ে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করেন। তিনি ব্যক্তিকে আশ্বস্ত করেন এরপর থেকে আর কোনরকম ফোন এবং মোটা টাকা চেয়ে দাবি করে তাকে বিব্রত করা হবে না। এরপরই ব্যক্তির কথা মত আরও ১০ লক্ষ টাকা সম্প্রতি ওই সাইবার ফ্রডস্টারের নির্দেশমতো একাউন্টে স্থানান্তরিত করেন। ইঞ্জিনিয়ারের অভিযোগ এই দশ লক্ষ টাকা স্থানান্তরের পর থেকে টাকার দাবি করে হুমকির ফোন আরো বেড়ে যায়। তার এবং তার স্ত্রীর ফেসবুক একাউন্টে কব্জা করে ওই অশ্লীল ভিডিও ছবি ক্রমাগত পাঠাতে লাগে সাইবার প্রতারকেরা। এরপরই গত ১৪ই সেপ্টেম্বর শিলিগুড়ি সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ব্যক্তি।সরকারি অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ব্যক্তির সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।
জানা গিয়েছে সম্প্রতি বিবাহ বন্ধন সম্পন্ন হয়েছে তার। নব দাম্পত্য জীবনের এই ঘটনায় বড় প্রভাব পড়েছে। এমনটি তার কাজের ক্ষেত্রেও এই ঘটনার খারাপ প্রভাব পড়েছে। এই বিষয়ে শিলিগুড়ির সাইবার থানার পুলিশ আধিকারিক জানান অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। এর আগেও এ ধরনের ঘটনায় সামনে এসেছে সে ক্ষেত্রে আমরা তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। পাশাপাশি এই ধরনের প্রলোভন এড়িয়ে চলতে হবে সাধারণ নাগরিকদের বলেও জানান পুলিশ আধিকারিক।