উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চালুর মুখে আধুনিক পরিকাঠামো সম্পন্ন সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। আগস্টের মধ্যে সুপার স্পেশ্যালিটি শুরু নির্দেশ পশ্চিমবঙ্গ মেডিকেল সার্ভিস কর্পোরেশন লিমিটেডের পর্যবেক্ষক দল ও রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের
উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চালুর মুখে আধুনিক পরিকাঠামো সম্পন্ন সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। বিবিধ প্রতিকূলতা পেড়িয়ে দ্রুত কাজ শেষের আশ্বাস মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের। বৃহস্পতিবার ফের পশ্চিমবঙ্গ মেডিকেল সার্ভিস কর্পোরেশন লিমিটেডের পর্যবেক্ষক দল ও রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকেরা সুপার স্পেশ্যালিটি কাজের গতি ও অবস্থান সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন। আধুনিক পরিকাঠামোর নিরীখে রাজ্যের প্রথম সারির যেকোনো বেসরকারি হাসপাতালকে টক্কর দেবে অত্যাধুনিক পরিকাঠামো সম্পন্ন উত্তরবঙ্গ মেডিকেলের কলেজ ও হাসপাতালের সম্পূর্ণ পৃথক এই সুপার স্পেশ্যালিটি। মেডিকেলে বিস্তৃন এলাকা জুড়ে এই সুপার স্পেশ্যালিটির বহুতল গড়ে তোলা হয়েছে। এইমসের ধাঁচে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে অত্যাধুনিক সুপার স্পেশালিটি ব্লক তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। সেমত কেন্দ্রীয় সরকারে কাছে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরীর জন্য ১৫০কোটি টাকা বরাদ্দ করে। ২৫০শয্যা বিশিষ্ট এই সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালটি প্রায় কেন্দ্রের ১২০কোটি ও রাজ্যের ৩০ কোটি টাকা প্রকল্প ব্যয়ে বহুতল পরিকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। ছয় তল হাসপাতাল ভবনের পৃথক পাচঁটি লিফ্ট, বর্জ্য নির্বাপক আধুনিক পরিকাঠামোগত ব্যাবস্থার পাশাপাশি চিকিৎসা পরিসেবাকে মান আরও উন্নতর করতে এক্সরে, এমআরআই ইউনিট থাকছে। মূলত গুরুতর জটিল রোগ, জরুরী ভিত্তিতে অত্যন্ত সংবেদনশীল মস্তিক ও হৃদযন্ত্রের জটিল অস্ত্রপচারের সুপার স্পেশালিটির হাত ধরে নয়া অধ্যায় লিখতে চলেছে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
ফলত গুরুতর তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এমন রুগীকে নিয়ে আর কলকাতা ছুটতে হবে না উত্তরবঙ্গের নাগরিকদের। যদিও চিকিৎসা পরিসেবার সংক্রান্ত এই কাজ অত্যন্ত জরুরী ভিত্তিতে সম্পন্ন করার কথা হলেও কেন্দ্রীয় নির্মাণ সংস্থার দীর্ঘ টালবাহানার রীতিমতো নাজেহাল হতে হয় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালকে। কেন্দ্রীয় নির্মাণ সংস্থা সাথে রাজ্যের চুক্তিমতো ২০১৯ এই কাজ সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে কেন্দ্রীয় সংস্থার লাগাতার ঢিলেঢালা মনোভাবে কচ্ছপ গতিতে চলতে লাগে কাজ। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে একাধিকবার কড়া নির্দেশিকাও জারি করা হয়। ব্ল্যাক লিস্টটেড করা হয় দুটি সংস্থাকে। পরবর্তীতে চলতি বছরের মার্চ মাসে চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারনের পরও শেষ পর্যায়ের কাজ এখনও চলছে। কাজে গতি আনতে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তরফে ডিন সন্দীপ সেনগুপ্তকে বাড়তি দায়িত্ব দিয়ে এই প্রকল্পের নোডাল অফিসার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। দায়িত্বে রয়েছেন চিকিৎসক অরুণাভ সরকারও। এদিন ফের নির্মাণ সংস্থার ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বার্তা বলে আগস্টের মধ্যেই কাজ শেষের নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিন উপস্থিত ছিলেন ডাইরেক্টরেট ও রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সামনেও কেন্দ্রীয় সংস্থার ঢিলে ঢালা মনোভাব পরিলক্ষত হয়। এমআর আই এর মাস্টাররুমের কাজ দেখতে চাইলে তাদের জানানো হয় চাবি মিলছে না। তবে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল দ্রুত গতিতে কাজ শেষ করে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের হাত ধরে অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরিষেবার নয়া ইনিংস দ্রুত শুরু করতে চাইছে। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা জানান সুপার স্পেশ্যালিটির জন্য চিকিৎসক ও চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে মেডিকেল। মূলত এখানে কার্ডিওজি, কার্ডিওথোড়াসিক, ইউরোলজি, নিউরোলজি, পেডিয়াট্রিক, নিউরো সার্জারি, এন্ডাক্রোনলজির মতো জটিল সমস্যার অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হবে। সমস্ত বিভাগে ২-৩জন করে চিকিৎসক রয়েছে মেডিকেলে। তাদের দায়িত্বেই থাকবে। সুপার স্পেশ্যালিটি প্রকল্পের নোডাল অফিসার তথা ডিন সন্দ্বীপ সেনগুপ্ত বলেন সংস্থার তরফে ৩০শে জুন নির্মাণ সম্পন্ন করে হস্তান্তরের সম্ভবনার কথা জানানো হয়েছে।আগস্টের মধ্যেই চালু করার টার্গেট রয়েছে। জল, বিদ্যুৎএর সংযোগ হয়ে গিয়েছে। বিশেষ পর্যবেক্ষণের পরই রুগী পরিষেবা শুরু করা হবে।