পানীয় জল অপচয় রুখতে টাস্ক ফোর্স। বেআইনি ভাবে বোরিং করে উত্তোলন রুখতে কড়া হাতে রাশ টানছে পুরসভা। পানীয় জল অপচয়ের ওপর নজরদারি চালাতে নামছে টাস্ক ফোর্স কড়া বক্তব্য মেয়র গৌতম দেবের। ডেঙ্গি নিয়ে আগাম উচ্চ পর্যায়ের সচেতনতা বৈঠক করবে পুরসভা। নদী ড্রেজিংয়ে বেরিয়ে আসা প্লাস্টিকের স্তুপ ঘিরে চ্যালেঞ্জ
শিলিগুড়ি। পানীয় জল অপচয় রুখতে টাস্ক ফোর্স। বেআইনি ভাবে বোরিং করে উত্তোলন রুখতে কড়া হাতে রাশ টানছে পুরসভা। পানীয় জল অপচয়ের ওপর নজরদারি চালাতে নামছে টাস্ক ফোর্স কড়া বক্তব্য মেয়র গৌতম দেবের। সেবকের তিস্তা থেকে জল আনয়ন করে শিলিগুড়ির তৃতীয় জল প্রকল্পের পরিকল্পনার স্তরে। গ্রীষ্মের তাপদাহের মাঝেই পানীয় জল সংকর দেখা দিয়েছে শহরে। পর্যাপ্ত পানীয় জলের যোগান সুনিশ্চিত করতে এই গরমে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অতিরিক্ত ট্যাংকার পাঠানো থেকে পাম্পিং স্টেশনে কাজে নামছে পুরনিগম। পুরসভার ৫১৮কোটির পানীয় জল প্রকল্প পাইপ লাইন নকশা নিয়ে বিভ্রাট তৈরি হয়েছে। যাদবপুর ওয়াটার রিসোর্স-বিভাগের তরফে ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞ দল নতুন করে গাজলডোবার তিস্তা থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল আনয়নের নতুন নকশা তৈরীর কাজ চলছে। পুরোনো নকশায় কিছু খামতি থাকার কারণে নতুন করে সেচ দপ্তরের সঙ্গে সমীক্ষার কাজে নামতে চলেছে যাদবপুর বিশ্ব বিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ টিম। তারা সমীক্ষা চালিয়ে নতুন রিপোর্ট পেশ করবে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি পুরো নিগমের মেয়র গৌতম দেব বলেন- পুরো রেডি ডিপিআর ছিল না। ডিপিআর করতে গিয়ে দেখা যায় নতুন করে পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ টা করতে হচ্ছে। মূল পাইপ লাইন বনের ভেতর দিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না।কেএমডি পাঁচ জন ইলেক্ট্রো মেকানিক্যালকে এসেছে। যাদবপুর বিশেষজ্ঞ টিম এসছে। তারা সমীক্ষার কাজটা করছে। ৪ঠা জুনের পর টেন্ডার খোলা হবে। প্ৰথম পর্যায়ে ২০৪ কোটির গাজলডোবা তিস্তা থেকে পাইপ লাইন স্থাপনের মধ্য দিয়ে জল আনয়নের কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যায়। সেই পাইপ লাইনের নকশায় বদল করে নতুন করে সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী কাজে নামবে পুরসভা। দ্বিতীয় পর্যায়ের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ইতিমধ্যেই নির্বাচনী বিধিনিষেধ লাগুর আগেই গিয়েছে পুরসভা। এদিন মেয়র বলেন নতুন করে এর পাশাপাশি তৃতীয় প্রকল্প নিয়ে ভাবা হচ্ছে। যা আগামী ২৫ বছরের জন্য সুনিশ্চিত করবে শহর। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত পরিকল্পনাকে কাজে লাগিয়ে সেবকের পাহাড়ি তিস্তা থেকে বৈকুণ্ঠপুর বনাঞ্চল হয়ে পাইপ লাইনের মাধ্যমে শহরে জল আনয়নের চিন্তাভাবনা করেছেন মেয়র। সেই বিষয়টি নিয়েও বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরিকল্পনার কাজ শুরু হয়েছে। তবে বর্তমান তীব্র গরমের দাপটে শহরের ৪৭টি ওয়ার্ডে নাগরিকদের পরিশ্রুত পানীয় জল পরিষেবার পর্যাপ্ত সংস্থান নিশ্চিত করতে একদিকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পানিয় একাধিক ট্যাংক পাঠানোর পাশাপাশি কড়া হাতে জলের যথেচ্ছ ব্যবহারের উপর লাগাম টানতে চলেছে পুরসভা।মেয়র বলেন শহরে যথেচ্ছ জলের অপচয় রোধে পুরো নিয়মের তরফে একটি টাস্ক ফোর্স নজরদারিতে নামানো হচ্ছে। বেআইনিভাবে পুরো নিগমের পানীয় জল থেকে পাম্পের মাধ্যমে বোরিং করে জল দিয়ে গাড়ি ধোয়া বাগান পরিচর্যার কাজ চলছে। এদিন মেয়র গৌতম দেব বলেন-
আপাদত পরিস্থিতি সামালে শহরের ওয়ার্ড নং ৩৩,৫,৪সহ পাঁচটি ওয়ার্ডে পাঁচ পাম্পিং স্টেশন বসানো হবে। এই পাম্পিং স্টেশনগুলির এক একটি খরচ পড়বে, প্রায় ৮৬ লক্ষ টাকা। ফলে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে পুরো নিগমের তরফে জলের সংস্থান সুনিশ্চিত করতে পাম্পিং স্টেশন বসতে চলেছে। ৫১৮কোটির মেগা জল প্রকল্পটির কিছু পুনরায় নকশা সংশোধন করে করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায় টেন্ডার ৪’ঠা মে খোলা হবে। শহরে পানীয় জল অপচয় করে বেআইনি বোরিং বন্ধ করবো। পুরো নিগমের অনুমোদন ছাড়া কোনভাবেই পুরসভার পানীয় জলের লাইনের যথেচ্ছ জল উত্তোলন করে তা ব্যবহার করা যাবে না। নজরদারি চালাবে টাস্ক ফোর্স। পানীয় জল দিয়ে গাড়ি ধোয়া বাগান পরিচর্যার কাজের ক্ষেত্রে ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ টানা হবে। পরবর্তীতে ভবিষ্যতে পরিবার কিছু পুরো নিগমের পানীয় জলের পরিমাণ নির্ধারিত হলে স্বাভাবিকভাবে তখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। অন্যদিকে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করতে ভোট পর্ব শেষ হতেই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে কথা জানান এদিন মেয়র।শহরে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৮ই মে স্বাস্থ্য দপ্তরের ঊর্ধ্বতন আধিকারিক দার্জিলিং জেলা মুখ্য জনস্বাস্থ্য আধিকারিক সহ শিলিগুড়ি হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুপার ও অন্যান্য আধিকারিকদের উপস্থিতিতে জরুরি বৈঠক করবেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের সঙ্গে বৈঠক করবেন মেয়র। যদিও বর্তমানে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্ত রুগী নেই। জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের ২৯ তারিখ পর্যন্ত শিলিগুড়ি পুরোনিগম এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৫। এদিন বোর্ড বৈঠকে মেয়র গৌতম দেব উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন- শিলিগুড়ির ক্ষেত্রে অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা। কারণ প্রতিদিন এখানে অসংখ্য বাইরের মানুষের যাতায়াত রয়েছে। ডেঙ্গি আক্রান্ত রুগীদের অধিকাংশই বাইরে থেকে এসে শিলিগুড়ি শহরে ভর্তি হয়েছে চিকিৎসার জন্য। তবে এতে আত্মতুষ্টির কোন বিষয় নেই। নর্দমা নালা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের পাশাপাশি জমা জল যাতে কোথাও জমতে না পারে তার ওপর নজরদারি চলছে। ৭টি স্পেশ্যাল টিম কাজ করছে। ভিসিটি টিমকে বাড়ির ভেতরে কোথাও জমা জল রয়েছে কিনা, মশার লার্ভা জমেছে কিনা ও স্প্রেয়িংয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেয়র উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন- উন্মুক্ত নিকাশী নালা শহর জুড়ে যতদিন থাকবে ততদিন ডেঙ্গিসহ মশা বাহিত রোগ গুলিকে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করা একটা চ্যালেঞ্জ। উন্মুক্ত নিকাশি নালার কারণে বিভিন্ন নদী গুলিতে দূষণের সম্মুখীন। ৬ কোটি ৬০লক্ষ টাকা ব্যয় হচ্ছে নদীগুলিকে ড্রেজিং করাতে। ফুলেশ্বরী পঞ্চনই মহিষমারি সেচ দপ্তরের আওতায় এনে জেসিবি নামিয়ে নদীতে ড্রেসিং চলছে কিন্তু প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক উঠে আসছে যা বড় চ্যালেঞ্জ। ফলে এই কাজ করতে আরো বিপুল অর্থের প্রয়োজন সে বিষয়েও আলোচনা হবে শেষ দপ্তরের সঙ্গে।