🔻 চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী এবং মেয়র পারিষদদের নিয়ে জরুরী বৈঠক করেন মেয়র গৌতম দেব।আক্রান্ত এলাকায় বাড়ি বাড়ি জ্বরের সার্ভে ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা চালাচ্ছে পুরনিগমের স্বাস্থ্যকর্মীরা। ডেঙ্গি প্রতিরোধে পাশাপাশি জন সচেতনতা বাড়াতে ট্যাবলো, মাইকিংয়ের সঙ্গে পথনাটিকার মাধ্যমে জনসচেতনতায় জোড়

 

শিলিগুড়ি। শিলিগুড়িতে ডেঙ্গি থাবা বসাতেই তৎপর পুরনিগম। শনিবার চিকিৎসক পুর নিগমের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী এবং মেয়র পারিষদদের নিয়ে জরুরী বৈঠক করেন মেয়র গৌতম দেব। ডেঙ্গি প্রতিরোধে পাশাপাশি জন সচেতনতা বাড়াতে ট্যাবলো, মাইকিংয়ের সঙ্গে পথনাটিকার মাধ্যমে জনসচেতনতার সিদ্ধান্ত। এদিকে ডেঙ্গির মোকাবিলায় আক্রান্ত এলাকায় বাড়ি বাড়ি জ্বরের সার্ভে চালাচ্ছে পুরনিগমের স্বাস্থ্যকর্মীরা। ডেঙ্গি রুখতে পুরনিগমের ৪৭টি ওয়ার্ডের জন্য রাজ্যের তরফে ১৩৪টি ভিসি টিমকে নামানো হয়েছে ময়দানে। সম্প্রতি শিলিগুড়ি শহরে দুজন ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এরমধ্যে পুরনিগমের ৩৬নাম্বার ওয়ার্ডের এক নাবালক শিশু সহ ৪৬নাম্বার ওয়ার্ডের এক ব্যক্তি রয়েছেন। শহরে এই মরশুমে মোট ১৪জন ডেঙ্গি আক্রান্ত এর রিপোর্ট রয়েছে। তবে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা দুই। শুক্রবার বিষয়টি পুরনিগমের সামনে আসতেই ওই এলাকাগুলিতে বিশেষ ভাবে ফগিং ও মশা নাশক স্প্রেয়ে করা হয়। শনিবার শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৩৬নাম্বার ওয়ার্ডে আক্রান্ত এলাকাকে চিহ্নিত করে জ্বরের সার্ভে করেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। পুরনিগমের স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে ৩৬ নাম্বার ওয়ার্ডের দক্ষিণ শান্তিনগর আক্রান্ত শিশুটির বাড়ির কয়েকশো মিটার এলাকা বাড়ি বাড়ি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। দুটি জ্বরের উপসর্গযুক্ত রুগীর সন্ধান মেলে। তবে ইতিমধ্যেই ডেঙ্গির প্রাথমিক টেস্ট এনএসওয়ান পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে জ্বরের উপসর্গযুক্ত পাঁচ বছরের এক শিশুর। যাতে কিছুটা স্বস্তিতে এলাকাবাসীরা। অন্যদিকে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দুটি তিনটি করে ভিসি টিম হাউস টু হাউস বাড়ি বাড়ি সার্ভের কাজ করছে। শিলিগুড়ি পুর নিগমের কমিশনার জানান রাজ্যের তরফে ৪৭টি ওয়ার্ডের জন্য ১৩৪টি টিম নেমে কাজ করছে।
সার্ভেতে বাড়ির ভেতরে থাকা জমা জল নজরে এলেই সাফাই করছে তারা।জমা জল নিয়মিত পরিষ্কারের বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।পুরনিগমের নিজস্ব আরও ১৫জনের ভিসি টিম রয়েছে। প্রয়োজনে তাদেরও নামানো হবে। অন্যদিকে শিলিগুড়ি ৩৬নাম্বার ওয়ার্ডের চার বছর বয়সী নাবালক শিশুটির ডেঙ্গির সঙ্গে স্ক্রাব টাইফাঁস আক্রান্তের রিপোর্ট সামনে আসায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দপ্তর।
স্ক্রাব টাইফাসের কামড়ের উৎস জানতে এলাকা ধরে সার্ভে চালাচ্ছে পুরনিগমের এন্টামোলজিস্টিরা। মূলত পাহাড়ি ক্ষেত্র ও তার পাদদেশ সংলগ্ন বনাঞ্চলের নির্দিষ্ট প্রজাতি মাইটের কামড় থেকে স্ক্রাব টাইফাস আক্রান্ত হয়ে থাকে। প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য অনুযায়ি এই প্রজাতির বিশেষ পতঙ্গ এর অস্তিত্ব নেই সমতলের বনাচ্ছলে। অথচ স্ক্রাব টাইফস আক্রান্ত শিশুটির পরিবারের দাবি বিগত কয়েক মাসে শিশুটির অন্যত্র ভ্রমনের কোনো রেকর্ড নেই। ফলে শিলিগুড়ি পুরনিগম এলাকা থেকেই এই স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়েছে সে। যা রীতিমতো জটিলতা বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য অধিকার্তাদের। ওই বিশেষ পতঙ্গ কোনো ভাবে সমতলের বনাঞ্চলকে হোস্ট করে বেড়ে ওঠা ও তার বাস্তুতন্ত্রগত বিবর্তন ঘটেছে কিনা সেসব সার্ভে করে দেখছেন এন্টামোলজিস্টরা। যদিও পূর্বে ২০২১সালে শিলিগুড়ি শহরে স্ক্রাব টাইফাস আক্রান্তের খবর মিলেছিল। তবে সমতল এলাকায় বিশেষ ওই পতঙ্গের কামড়ে বিরল এই রোগে আক্রান্তের তেমন খবর নেই। যার ফলে ওই শিশু কিভাবে স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হলো তা খতিয়ে দেখতেই সার্ভে করছেন এন্টামোলজিস্টরা বলে জানান শিলিগুড়ি পুর নিগমের কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া।এদিকে স্বাস্থ্য দপ্তর ও মেয়র পারিষদের নিয়ে জরুরী বৈঠকের পর মেয়র গৌতম দেব জানান ডেঙ্গি মোকাবিলা ভিসি টিম, হাউস টু হাউস সার্ভে, ফগিং, স্প্রে, মশা মারার জন্য ব্লিচিং,তেল সমস্তটাই করা হচ্ছে। তার পাশাপাশি জন সচেতনতা বাড়াতে বাড়ি বাড়ি লিফলেট বিলি করা হবে পুরনিগমের তরফে। পুর এলাকা জুড়ে জন সচেতনা বাড়াতে মাইকিং করা হবে। প্রত্যেকে যাতে মশারির ব্যবহার করেন তা নিয়ে সচেতন করা হবে। অভিনব কায়দায় পথ নাটিকার মাধ্যমে পাড়ায় পাড়ায় মানুষকে ডেঙ্গি প্রতিরোধ থাকতে সচেতনতামূলক পদক্ষেপগুলি গ্রহণের আবেদন জানানো হবে।

You cannot copy content of this page