আচমকা এলাকার বিদ্যুৎ এর লাইনে হাই ভোল্টেজ তড়িৎ প্রবাহের জেরে ঘোর বিপত্তি। আগুনের ফুলকি দিয়ে পুড়ে গিয়েছে প্রায় 500 মিটার এলাকা জুড়ে দুশো বাড়ির টিভি ফ্রিজ সহ মূল্যবান যান্ত্রিক সরঞ্জাম। কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি এলাকাজুড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি অদূরে পাঁচকেল গুড়ি, দেওয়ানী বস্তি, পূর্ব সিপাহী পাড়া এলাকায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক মোবাইল ফোন। বিধ্বংসী পরিস্থিতি তৈরী হয় এলাকাজুড়ে। স্থানীয়দের বয়ানে পাচকেল গুড়ির একটি বাড়ির দুটি কলাগাছ থেকে আগুনের দলা ছিটকে আসতে দেখা যায়। আগুনের পরপর দুটি দলা এসে পড়ে বাড়ির বারান্দায়। এরপরই এলাকার যাবতীয় বিদ্যুতের তার আগুনের ফুলকি দিয়ে ওতপ্রোত ছিটকে পড়ে। প্রতিটি বাড়ির টিভি ফ্রিজ আগুনের ফুলকি দিয়ে জ্বলে যায়। খুলে পড়ে বৈদ্যুতিক ফ্যান। আগুনে পুড়ে যায় বাড়িগুলির বৈদ্যুতিক মিটার বাক্স। আতঙ্কে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নেয় কয়েক শো পরিবার। আগুনের ফুলকি ছুটে এসে হালকা চোট পান একটি শিশু ও মহিলা।
ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় এস এফ রোড পাওয়ার স্টেশনের বিদ্যুৎ দপ্তর এর ম্যানেজার সুনীল লামা। পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষের তরফেও কন্ট্রোল অফিসার ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
তবে বিধস্ত সময়তে সুরাহার পরিবর্তে রাজ্য সরকারের দুই দপ্তর একে অপরের ওপর দোষারোপের আঙল তুলতে লাগে।
ওই এলাকা দিয়ে একাধিক হাইটেনশন তার গিয়েছে। তাই বিদ্যুৎ এর ডব্লিউবিএসইডিসিএল দপ্তর এর অভিযোগ এত ভোল্টেজ তাদের তারে সরবরাহের হওয়া সম্ভব নয়। হাই টেনশনের সংযোগেই ঘটেছে বিপত্তি।
অন্যদিকে পাওয়ার গ্রিডের হইটেনশন কর্তৃপক্ষ এর সাফ মন্তব্য এই ঘটনার সঙ্গে হাই টেনশনের কোন যোগ নেই। ঘটনার জেরে হাই টেনশন তারের ওপর কলাগাছ পড়ায় কিছু সমস্যা তৈরি হয় তা তদারকি করতেই পাওয়ার গ্রিড কন্ট্রোল অফিসার এলাকায় পৌঁছায়।
এদিকে ঘটনাটি রাতের সময়তে হলে কয়েকশো প্রাণসংশয় এর আশঙ্কা ছিল, যা ভেবে আঁতকে উঠেছেন এলাকাবাসীরা। ঘটনার পর রাত পর্যন্ত গোটা এলাকায় সম্পুর্ন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকে। আগুনের ফুলকি আতঙ্ক কাটতে চাইছে না এলাকাবাসীদের।
পাওয়ার স্টেশন ম্যানেজার সুনীল লামা অবশ্যই জানান ঘটনার বিষয়ে বিদ্যুৎ দপ্তর এর উর্ধ্বপাতন আধিকারিকদের জানানো হয়েছে। কিভাবে ঘটনা ঘটলো তা বিশদ তদারকি পড়তে বিদ্যুৎ দপ্তর এর উচ্চ আধিকারিকদের একটি পর্যবেক্ষক দল শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে। পাশাপাশি তিনি বলেন সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব ট্রান্সফর্মার বদল করে এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করার বিষয়টিতে নজর দিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে বিদ্যুৎ দপ্তরে আধিকারিকদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীরা। সে বিষয়ে পাওয়ার স্টেশন ম্যানেজার জানান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সমস্ত বাড়ি সার্ভে করে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতি রিপোর্ট পাঠানো হবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে। এরপরই ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নিয়ে কিছু বলা সম্ভব হবে।