আইনের মারপ্যাচে দাদাগিরি পুলিশের! থানায় তলব করে আইনজীবীর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ শিলিগুড়ি থানার আইসি সুদীপ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। আইসির বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনারকে অভিযোগ দায়ের আইনজীবীর। পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সব জেনেও নির্বাক অভিযোগ আইনজীবীর।
[ভিডিও -এর সত্যতা যাচাই করেনি উত্তরবঙ্গ journal]
ট্রাফিক পুলিশের জরিমানা আদায়ে অনিয়ম থেকে শুরু করে থানায় তলব করে আইসির দাদাগিরি- পুলিশের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযোগ তুলছেন শিলিগুড়ির আইনজীবী। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ট্রাফিক নিয়ম ভাঙ্গার অজুহাত দেখিয়ে রীতিমতো আইনজীবীকে শাসিয়ে মোবাইল ছিনিয়ে নেয় ট্রাফিক পুলিশের এসআই। বিষয়টি শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও মেলেনা সদুত্তর। পাল্টা আইনজীবীর বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর চড়াও হওয়ার মিথ্যা মামলা দায়ের করে তলব করা হয় থানায়। এমনটাই অভিযোগ শিলিগুড়ি আদালতের আইনজীবী তথা এলএলএম ছাত্রের।
আইনজীবীরা অভিযোগ শুধু তাই নয়, শিলিগুড়ি থানার আইসি সুদীপ চক্রবর্তী থানার ভেতরে আইনজীবীকে হুমকি দেন। অভিযোগ থানার আইসি আইনজীবিকে রীতিমতো শাসিয়ে বলেন সিংহের ডেরায় ঢুকেছো। এরপরই কথা কাটাকাটির পর আইনজীবীকে ঘটনা মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি করতে দেখেই ফোন ছিনিয়ে নেন আইসি। পাল্টা আইনজীবীকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ। ৯জুন এই ঘটনা ঘটে। পুরো বিষয়টি জানিয়ে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারের কাছে শিলিগুড়ির আইসি সুদীপবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন আইনজীবী রোহিত প্রসাদ।
ঘটনার সূত্রপাত হয় শিলিগুড়ি জলপাইমোড়ের ট্রাফিক গার্ডে থেকে। আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাফিক সিগন্যাল লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তার স্কুটি থামিয়ে গাড়ির নথি পত্র যাচাই করে পুলিশ। আইনজীবীর বক্তব্য পুলিশকে অনলাইন ফাইল এপে থাকা গাড়ির যাবতীয় নথিপত্র দেখানো হয়। তবে ট্রাফিক পুলিশ অনলাইনে নথিপত্রের বৈধতা মানতে নারাজ। আইনজীবীর কাছে জরিমানা ধার্য করে ট্রাফিক পুলিশ। অন স্পট চালান কেটে জরিমানার কথা বলেন আইনজীবী। আর এরপরই পুলিশের তরফে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় শুরু হয়। আইনজীবীর অভিযোগ তার কাজের ব্যস্ততার কারণেই অন স্পট জরিমানার আবেদন করেন তিনি, আর তাতেই তেলে বেগুনে ফুঁসে ওঠে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ। এই পুরো ঘটনা ফোনে রেকর্ড বন্দি করে আইনজীবী। ভিডিও রেকর্ডিংয়ের আভাস পেয়েই এক এএসআই বলপূর্বক আইনজীবীর কাছ থেকে তার মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। এরপরই ট্রাফিক পুলিশের আচরণ ও উক্ত এসআই এর বিরুদ্ধে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন আইনজীবী।
তবে পাল্টা ঘটনার পর তার নামে পুলিশের ওপর চড়াও হওয়ার মিথ্যে মামলায় আইনি নোটিশ পাঠিয়ে ৯ই জুন শিলিগুড়ি থানায় তলব করা হয়। সেখানে থানার আইসি থানার ভেতর আইনজীবিকে রীতিমতো হুমকি দেন বলেও অভিযোগ। পূর্বে করা অভিযোগ আইনজীবীকে তুলে নিতে চাপ দেওয়া হয়। এরপরই তার কাছে থাকা অপর একটি মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নেন থানার আইসি।ঘটনার দিনই আইনজীবী শিলিগুড়ি থানার আইসি সুদীপ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেও শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারকে বিস্তারিত জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
এই বিষয়ে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি হেডকোয়ার্টার জয় টুডু জানান তদন্ত চলছে।
আইনজীবী রোহিত প্রসাদ জানান বিষয়টি শিলিগুড়ি আদালতের বারের কমিটিকেও জানিয়েছে তিনি। শিলিগুড়ি আদালতের বারের সম্পাদক আলোক ধারা জানান ওই আইনজীবীর বারের সদস্য নয়। তবে যে কোনো আইনজীবীর সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে বারের তরফে সে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হয়। এই বিষয়েও বারের কমিটি একটি আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।