ছদ্ম বেশে আল কায়দার বিষ উত্তরে। জাল নথি থেকে ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি, অনুপ্রবেশকারী অপরাধ যোগের ডেরা হয়ে উঠেছে উত্তরের ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত। সীমান্তের কাঁটাতার গড়িয়ে অহরহ বেআইনী যোগযোগ-গতিবিধির গোপন তথ্য সামনে আসতেই কেন্দ্রীয় সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্ন চিহ্নের মুখে!কোচবিহার জেলার সিতাই, দিনহাটার সীমান্ত সহ নতুন করে আন্তঃরাষ্ট্র নিরাপত্তায় উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মেখলিগঞ্জ সীমান্ত
শিলিগুড়ি। ছদ্ম বেশে আল কায়দার বিষ উত্তরে। জাল নথি থেকে ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি, অনুপ্রবেশকারী অপরাধ যোগের ডেরা হয়ে উঠেছে উত্তরের ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত। সীমান্তের কাঁটাতার গড়িয়ে অহরহ বেআইনী যোগযোগ-গতিবিধির গোপন তথ্য সামনে আসতেই কেন্দ্রীয় সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্ন চিহ্নের মুখে! উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জলপাইগুড়ি জেলার ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত ধরেই বেআইনি অনুপ্রবেশ থেকে চোরা চালানের গতিবিধি সক্রিয়। সীমান্ত ঘেষা হলদিবাড়ি ও ফুলবাড়ির মতো প্রান্তিক এলাকা হয়ে উঠছে অপরাধ যোগের ডেরা। উত্তরের আলকায়দা জঙ্গি যোগে এনআইএ -এর হানার পরই পরতে পরতে খসে পড়ছে আন্তরাষ্ট্র সীমান্তের সুরক্ষা চক্ষুর মাঝে অহরহ চলা বেআইনি অনুপ্রবেশ থেকে চোরাচালান, আন্তরাষ্ট্র পাচার চক্রের মতো গতিবিধির ভয়ঙ্কর তথ্য। সীমান্ত সুরক্ষায় চলা নজরদারির ফাঁক গলিয়ে নির্দিষ্ট কোচবিহার জেলার বিভিন্ন অংশের ভারত সীমান্ত দিয়ে জাল নথি সরবরাহ ও বাংলাদেশের নাগরিকদের অনুপ্রবেশ সক্রিয়। এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত ব্যবহার করেই আলকায়দা জঙ্গি সংগঠনকে অর্থের যোগান দিয়ে মদত দেওয়া হচ্ছে। জঙ্গি গোষ্ঠির বিস্তার ও অর্থের যোগান দিতেই বেআইনিভাবে সীমান্ত পারাপার করে বাংলাদেশের নাগরিকেরা ভারতে অনুপ্রবেশ এবং পাক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগের সূত্র ধরে সোমবার উত্তরবঙ্গে হানা দেয় এএনআই। এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে ভারত বাংলাদেশ কোচবিহার জেলার দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত ব্যবহার করে বেআইনি ভাবে বাংলাদেশের নাগরিকেরা ভারতে অনুপ্রবেশ করছে। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে জেরক্স-এর দোকান থেকে সাইবার ক্যাফের আড়ালে চলছে জাল আধার কার্ড থেকে জাল স্কুল সার্টিফিকেট সহ ভুয়ো নথি তৈরীর কাজ। প্রান্তিক এলাকা গুলিতে একেবারে ছাপোষা জীবন যাপনের আড়ালে জাল নথি তৈরি,হাতবদল থেকে সীমান্ত পারপার করে আর্থিক যোগান পৌঁছে দেওয়ার জঙ্গি যোগের কাজ করছে এজেন্টরা।
দেখা গিয়েছে হলদিবাড়ি পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা যুবক একেবারে চালচুলোহীন পরিবারের বলেই এলাকায় পরিচিত। বাবা ভিক্ষাবৃত্তি করে ক্যাটারিংয়ের কাজ করে যুবক এমনটাই জানেন স্থানীয়রা। আবার একই ভাবে ফুলবাড়িতে পুঁটিমারীর বাসিন্দা হিসেবে শিলিগুড়ি নিকটস্থ ফুলবাড়ি কাঞ্চন বাড়ি এলাকায় পুটিমারির বাসিন্দা হিসেবে ভাড়ার বাড়ির তিন তলার ঘর ভাড়ায় নিয়ে বসবাস করা এনআইএর সন্দেহের তালিকায় থাকা যুবক মিথ্যে পরিচয় দিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল সে পর্দা ফাঁস হয় হানার পরই। যুবক জেরার পরে জানায় সে হলদিবাড়ির বাসিন্দা। ভাড়ার মালিক কে প্রসাধনের দ্রব্যের দোকান রয়েছে ফুলবাড়ী এলাকায় বলে বাড়ি ভাড়া নিল পরবর্তীতে হানার পর যুবক জানিয়েছে তার এক্সপোর্ট ইমপোর্টের ব্যবসা রয়েছে এ বিষয় ভ্রুনক্ষরেও জানতেন না বাড়ির মালিক ও স্থানীয়রা।
এদিকে বিএসএফের তথ্য অনুযায়ী উত্তরবঙ্গে গাজোল থেকে মেখলিগঞ্জ সীমান্ত পর্যন্ত ৯৩৬ কিলোমিটার ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা।
কোচবিহার জেলার ভারত বাংলাদেশ দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ সীমান্ত এনআইএর তদন্তে জঙ্গি যোগে আন্তঃ রাষ্ট্র নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এলার্মিং হয়ে উঠেছে। দিনহাটা সিতাই-এর সীমান্তের পাশাপাশি সম্প্রতি মেখলিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান থেকে পাচার চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আর সীমান্তবর্তী ফুলবাড়ী, হলদিবাড়ির মতো প্রান্তিক এলাকায় গুলিকে টার্গেট করে বাড়ি ভাড়া,আবার কখনও স্থানীয় বাসিন্দার আত্মীয় পরিচয়ে ছাপরা ঘর করে সেফ ডেরা গড়ছে। এনআইএ সূত্রের খবর ভুয়ো নাম, একাধিক পরিচয় ও একাধিক জীবিকার নামে ছদ্ম বেশ নিয়ে আল কায়দাকে মদত দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ কারীদের মগজ ধোলাই করে অর্থের যোগান ও জঙ্গী যোগে উদ্বুদ্ধ করে উত্তরবঙ্গের সীমান্ত এলাকায় জাল বিস্তার করছে আল কায়দা।
নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁটাতার বিহীন তিন বিঘা, তিস্তা নদীর চর এলাকা। এই অঞ্চল দিয়ে ভারত বাংলাদেশকে এপার ওপার করে তিস্তা নদী বয়ে গিয়েছে।যার ফলে নদী ও প্রাকৃতিক কারণে সীমানার বিস্তীর্ণ অংশ কাঁটাতারের বেড়া নেই। এই বিস্তীর্ণ অংশ সীমান্ত সুরক্ষার ক্ষেত্রে এলার্ট এলাকা হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে। সীমান্তবর্তী বাসিন্দা স্থানিয়দের সূত্রে জানা গিয়েছে জরুরি নজরদারি থেকে একাধিক আধুনিক নজরদারির কথা বলে আধুনিক নজর দারির কথা জানানো হলেও সীমান্তের কাঁটাতার গড়িয়ে আন্তরাষ্ট্র সোনা পাচার চক্র থেকে, গবাদি পশু পাচার, বেআইনী অনুপ্রবেশের মতো সবই চলছে নিরাপত্তার ফাঁক ধরে। কোচবিহার সীমান্ত ধরে প্রায় নিত্য সোনা পাচারের ঘটনা সামনে উঠে আসে। এদিকে আলকায়দা যোগ সন্দেহে এনআই-এ এখনও হলদিবাড়ির যুবক বিশ্বজিৎ বর্মনের খোঁজ করে উঠতে পারেনি। তার বাড়ীতে হানা দিয়ে ওই সন্দেহজনক যুবক না থাকায় দলবল নিয়ে ফিরতে হয় এনআইএ-র তদন্তকারী আধিকারিকদের। তার মায়ের কাছে থেকে জানা যায় ছেলে কর্মসূত্রে শিলিগুড়িতে থাকে যদিও শিলিগুড়িতে ও বিশ্বজিতের খোঁজ মেলেনি। জানা গিয়েছে কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে গিয়েছে সে। এনআইএর টিম বিশ্বজিতের খোঁজ নজরে কায়েম করে রয়েছে।অপরদিকে আলকায়দা জঙ্গি যোগ সন্দেহে নিউজলপাইগুড়ি ফুলবাড়ির কাঞ্চন বাড়ি এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকা হলদিবাড়ির অপর যুবক সবুজ রায়কে অবশ্য টানা ১১ ঘণ্টা জেরার পর ছেড়ে দেয় তদন্তকারী টিম। আলকায়দাকে অর্থ যোগানের কাজ করে যুবক সে সন্দেহে সন্দেহভাজন যুবককে জেরা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তার হেফাজত থেকে সিম কার্ড,একাধিক ক্রেডিট কার্ড এবং বেশ কয়েকটি পাস বইয়ের তথ্য সংগ্রহ করেছে এনআইএ।