শিলিগুড়ি

ইংরেজ আমলের ১২৫বছরের প্রাচীন স্টিম ইঞ্জিন ফের রেল ট্র্যাকে!

আঠারো শতকের প্রাচীন হেরিটেজ স্টিম ইঞ্জিন সংস্কার করে রেল ট্র্যাকে ফেরাতে চায় ডিএইচআর।দিল্লী রেল মিউজিয়াম থেকে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের প্রায়১০০ বছরের প্রাচীন ব্রিটিশ আমলের টয়ট্রেনের লোকোমোটিভ ফিরলো নিজ পাহাড়ী অঞ্চলে।

 

শিলিগুড়ি। আঠারো শতকের প্রাচীন হেরিটেজ স্টিম ইঞ্জিন সংস্কার করে রেল ট্র্যাকে ফেরাতে চায় ডিএইচআর।দিল্লী রেল মিউজিয়াম থেকে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের প্রায়১০০ বছরের প্রাচীন ব্রিটিশ আমলের টয়ট্রেনের লোকোমোটিভ ফিরলো নিজ পাহাড়ী অঞ্চলে। যদিও ট্র্যাকে ফিরতে এখনও বাকি যুদ্ধজয়! দিল্লি থেকে ট্র্যাকে করে দার্জিলিং তিনধরিয়া ওয়াক শপে এসে পৌছেছে শতবর্ষ পেড়িয়ে ১৮৮২-১৮৮৩র ইংরেজ আমলে ইউনাইটেড কিংডম-এর ইঞ্জিন নির্মাতা সংস্থার হাতে তৈরি প্রাচীন হেরিটেজ খেলনা ট্রেনের লোকমোটিভ।টানা ৩০বছর দিল্লির মিউজিয়ামে টয়ট্রেনের ইতিহাসকে দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে আলোকিত করে বয়লায় চালিত স্টিম ইঞ্জিনটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে দার্জিলিংয়ে ফিরিয়ে আনা হয়েছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের ওয়াকশপে। বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে ট্রাকে করে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে তিনধরিয়া ওয়ালশপে আনা হয়। সেলুলয়েডের নস্টালজিয়া মোড়া হেরিটেজ দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের টয়ট্রেন নিয়ে রয়েছে কতশত স্মৃতি। সে স্মৃতি রোমান্থন করলে শতাব্দী প্রাচীন ব্রিটিশ ইতিহাস থেকে শুরু করে চোখের সামনে ভেসে উঠবে রূপোলি পর্দার একের পর এক বলি ব্লকবাস্টার। এমনকি স্মৃতির পাতায় সেঁটে রয়েছে বহু দাগ কেঁটে যাওয়া টলি আর্টফিল্ম থেকে কতশত কবিতা উপন্যাস এই পাহাড়ের বুক চিড়ে ছুটে চলা হেরিটেজ টয়ট্রেনকে ঘিরে। এই প্রাচীন খেলনা ট্রেনের স্টিম ইঞ্জিনটিকে সংস্কার করে সারিয়ে তোলার উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে দার্জিলিঙ হিমালয়ান রেলের তরফে। ডিএইচআরের ইউনেস্কো স্বীকৃত হেরিটেজ ওয়াকশপে পূর্বেও ১০০ বছরের পুরোনো ব্রিটিশ হাতে তৈরি খেলনা ট্রেনের প্রথম লোকমোটিভ বেবী সেবককে সংস্কার করে রেলট্র্যাকে ফেরানো হয়। পুনরায় কু ঝিক ঝিক ছন্দে ছুটে চলছে ন্যারোগেজ লাইন ধরে লোকমোটিভ বেবী সেবক। এরপরও ১৯৪৩ সাল থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়া টার্নটেবল চালু করা হয়। তিন দশক ধরে দিল্লির রেল মিউজিয়ামের ডিসপ্লেতে থাকা প্রাচীন হেরিটেজ টয়ট্রেনের কয়লা চালিত স্টিম ইঞ্জিনটি শোভা বর্ধিত করে চলছিল। মূলত ১৯৭৬এ এই কয়লা চালিত বয়লার লোকোমটিভটিকে বিশেষ ভাবে তুলে ধরতে পাঠনো হয় নিউ দিল্লিতে। মূলত ১৮৮১ সালে পাহাড়ের বুকে ন্যারোগেজের লাইন বসিয়ে দার্জিলিঙ হিমালয়ান রেলের প্রতিষ্ঠা। ব্রিটিশ আমলের এই ঐতিহ্যবাহী খেলনা ট্রেন ভারতকে বিশ্বের দরবারে ইউনেস্কোর হেরিটেজ খেতাব এনে দিয়েছে।মূলত ১৮৮১ সালে পাহাড়ের বুকে ন্যারোগেজের লাইন বসিয়ে দার্জিলিঙ হি১০০মালয়ান রেলের প্রতিষ্ঠা।শতাব্দি প্রাচীন বছরের পুরোনো ব্রিটিশ নির্মাণকারী এজেন্সির মারফৎ তৈরি এই লোকমোটিভ ছুটতো পাহাড়ি নীরবতা ভেদ করে। জানা গিয়েছে, তৎকালীন সময়তে গ্ল্যাসকো ইউকে এই ইঞ্জিন প্রস্তুত করে।এবারে সেই অচল অবস্থায় দীর্ঘ তিরিশ বছরের লোকমোটিভকে ট্র্যাকের ফেরাতে ওয়াক শপে সংস্কার কাজে নেমেছে রেলের বিশিষ্ট কারিগরি বিভাগের দায়িত্বে। ডিএইচআর সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দশক অচল অবস্থায় পড়ে থাকায় প্রায় অধিকাংশ যন্ত্রপাতি বদলের প্রয়োজন আছে। ইঞ্জিনের ফ্রেম দেখে ঠিক মনে হলেও ইঞ্জিনের বয়লার বিকল হয়ে গিয়েছে। ফলে সমস্তটাই টুকরো টুকরো করে নতুন যন্ত্রপাতিতে সারিয়ে তুলতে হবে ইঞ্জিনটিকে। যা সময় সাপেক্ষ। প্রাথমিক ভাবে চার মাসের বেশি সময় লাগবে এই ইঞ্জিন সারিয়ে সংস্কার করে হেরিটেজ খেলনা ট্রেনের রেল লাইনে ফেরাতে। বর্তমানে ১২টি পুরোনো ব্রিটিশ আমলের ইঞ্জিন চলছে। এরমধ্যে একটিমাত্র লোকো বেশ কয়েক বছর আগে নির্মাণ করা হয়। ফলে বহু প্রাচীন এই রেল ইঞ্জিন সারাই সংস্কার করে ট্র্যাকে ফেরানো
কিছুটা চ্যালেঞ্জের বলেও জানা গিয়েছে। শতক পুরোনো ইঞ্জিনটি ৭৯৯বি। দার্জিলিঙ হিমালয়ান রেলের ডিরেক্টর রিষভ চৌধুরী জানান প্রায় তিরিশ বছর আগে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লি মিউজিয়াম। সেখানে প্রদর্শনীতে রাখা হয়। তবে কয়লা চালিত স্টিম ইঞ্জিনের চাহিদা রয়েছে বিদেশের পর্যটকদের কাছে। বিদেশি পর্যটকদের কাছে কয়লা চালিত চার্টার পরিসেবায় অধিক আগ্রহ নজরে আসে। সেমত প্রাচীন হেরিটেজ ইঞ্জিনটিকে প্রদর্শনীর পরিবর্তে জীবন্ত ইতিহাসের দলিল হিসেবে আমরা হেরিটেজ দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের ন্যারোগেজ দু ফির গেজ লাইনের পুনরায় চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সংস্কার কার্য সম্পন্ন করে রেল ট্রাকে নামানো হবে এই জীবন্ত ইতিহাসকে। এই কাজে কিছুটা সময় লাগবে।

 

Share Messenger Whatsapp Post