২৭বছরের জবরদখলের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের নির্দেশ। আদালতের নির্দেশে আট পরিবারকে উচ্ছেদ পুলিশের।  শিলিগুড়ি মহিলার জমি থেকে দখলদার ৮-১০টি পরিবারকে সরালো পুলিশ। কারো চৈত্র মাস তো কারো সর্বনাশ!এদিন সে প্রবাদ বাক্যই যেন সত্য হলো। শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৪০নাম্বার ওয়ার্ড ভক্তিনগর থানার অধীনে থাকা গৌরাঙ্গপল্লী এলাকায় শুক্রবার বিশাল পুলিশ বাহিনী দিয়ে জবরদখল করে থাকা
১০টি পরিবারকে সরিয়ে বিধবা মহিলা প্রতিভা সাহার হাতে তুলে দেওয়া হয় তার ২০কাঠা জমির অধিকার। তবে এদিন উচ্ছেদ করতে পুলিশ ও আদালতের আধিকারিক পৌঁছলে দখলদারি জমিতে বাড়ি করে বসবাস করে থাকা পরিবারের সদস্যদের বাধার মুখে পড়তে হয় তাদের। আদালতের আইন উপেক্ষা করে পুলিশকে নানাভাবে বল পূর্বক বাধা দিতে লাগেন তারা। এমনকি পুলিশকে বাধা দিয়ে আর্থ মুভার গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন দখলদাঁড়িতে জমিতে পাকা বাড়ি করে বসবাসকারী পরিবার গুলির মহিলারা। বুলডোজারের গাড়ির চাকার নীচে ঢুকে পড়ে দখল উচ্ছেদ রোখার চেষ্টা করে এক যুবক। বাধ্য হয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ৭-৮জনকে গ্রেপ্তার করে। জমির মালিক প্রতিভা সাহা জানান এই জমি তার স্বামীর দিলীপ সাহার নামে রয়েছে। তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী হিসেবে বর্তমান মালিক তিনি। দীর্ঘ ৪০বছর আগে এই এলাকায় ২০কাঠা জমিটি নিয়েছিলেন তারা। সেসময় অস্থায়ী খুঁটি ছিল তবে প্রাচীর ছিলনা। ২৭বছর আগে এই জায়গায় ছয়টি পরিবার জবরদখল করে বসে। নিম্ন আদালতের দীর্ঘ ২৬বছর ধরে মামলা চলার পরও কোনো সুরাহা না মেলায় পুনরায় উচ্চ আদালতের মামলা করেন তারা। চার বছর মামলা চলার পর প্রায় এক মাস আগে হাইকোর্ট তাদের পক্ষে রায় দিয়েছে। এই জমির ওপর সম্পূর্ণ অধিকার প্রতিভা সাহার বলে জানিয়ে নোটিস জারি করেছে উচ্চ আদালত। এরপরই এদিন শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের এসিপি ইস্ট শুভেন্দু কুমার ও ভক্তিনগর থানার আইসি অমরেশ সিংয়ের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকা ঘিরে ফেলে। অন্যদিকে দখলীকৃত জমির ওপর বাড়ি করে থাকা ৮টি পরিবার নেপাল পাল, গোপাল পাল, অমিত মন্ডলদের দাবি আদালতে কোনো আগাম নোটিস তাদের দেওয়া হয়নি। উপেন দাস নামে এক ব্যক্তির কিছুটা জায়গা রয়েছে তার নামে সমন আসে। তাদেরকে মালিক পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি এই জমি বিক্রি করেছে। গোপাল পাল বলেন-৯.৫লাখ টাকা দিয়ে ২০১৪সালে দুই ভাইতে তিন কাঠা জমি কিনেছি। জমির খতিয়ান, পুর করের কাগজ, হোল্ডিং নাম্বার, বিদ্যুতের সংযোগ সবই রয়েছে তাদের নামে। এই মালিক পক্ষকে তারা চেনেন না। যদিও এদিন জমির মালিকের পরিচয় দিয়ে জমি বিক্রয়কারী পরিমল কর্মকার, সমীরণ ও উপেন দাসের নাম উঠে আসে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলির মুখে। তারা কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন ছেলেপুলে নিয়ে এখন ফুটপাতে বসতে হবে। দিনভর অভিযানের পর আর্থ মুভার দিয়ে নাজির ও আদালতের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে আট থেকে দশটি টিন ও আংশিক ছাদ দিয়ে থাকা পাকা বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়। এদিকে জানা গিয়েছে প্রতিভা সাহার স্বামী প্রয়াত দিলীপ সাহার বাবার সম্পত্তি হওয়ায় তার অপর ভাই বেশ কিছু বছর আগে তাকে অন্ধকারে রেখে জায়গাটি দালাল মারফত বেশ কয়েকটি ভাগে বিক্রি করে দেয়। বিষয়টি জানার পরেও আদালতের দ্বারস্থ হয় প্রতিভা সাহার পরিবার। এদিকে এ বিষয়ে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুন্না প্রসারের সঙ্গে যোগাযোগ করার একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

 

 

 

 

You cannot copy content of this page