মরণোত্তর অঙ্গদানে অঙ্গিকারবদ্ধ হয়ে সমাজের দৃষ্টান্ত শিলিগুড়ি সূর্যসেন মহাবিদ্যালয়ের তিন পড়ুয়ার। অনুরক্তি, মনোজ, শুভার্থী এখন শহরের কলেজে কলেজে উদাহরণ। সূর্যসেন মহাবিদ্যালয়ের অনুরক্তি ঘোষ ও শুভার্থী দাস এবং মনোজ বর্মন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মরণোত্তর দেহ দানে অঙ্গীকারবন্ধ হয়েছে। এদের কারো বয়স উনিশ তো কারো সবে কুড়ি। তবে জীবনের এক এক নতুন দর্পন সামনে এনে সমাজের বস্তাপচা চিন্তা ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তারা। সূর্যসেন কলেজের তৃতীয় বর্ষের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্রী অনুরক্তি ঘোষ সমাজবিদ্যার ছাত্র। শুধু লেখাপড়ায় নয় কলেজে এনএসএসের সঙ্গে যুক্ত থেকে শিক্ষক শিক্ষিকাদের সঙ্গে নানা সামাজিক কাছে করে সে। সেই প্রথম চলতি মাসে গত ২৫তারিখ উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মরণোত্তর অঙ্গ দানের ইচ্ছে প্রকাশ করে। গত ৩০শে মার্চ মেডিকেলে এ্যানাটমি বিভাগে গিয়ে অঙ্গ দানের অঙ্গিকার পত্রে পূর্ন করে। তার মুখে সে কথা জেনেই মহান অঙ্গদানের অঙ্গীকার বদ্ধ হয় বৃহস্পতিবার তার কলেজের তৃতীয়বর্ষের সুভ্যার্থী দাস ও প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের মনোজ বর্মন। সুভ্যার্থী দাস জানায় সে কলেজে ভর্তির পর থেকেই এনএসএস সঙ্গে নানা কাজ করে। সমাজবিদ্যার ছাত্রীর সাফ মন্তব্য মৃত্যুর পর আমাদের এই শরীরটা নষ্ট হয়ে যাবে, পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এর থেকে আমার শরীরের অঙ্গ যদি আরও মানুষের প্রাণ বাঁচায় তার চেয়ে ভালো কি হতে পারে। যদি দেহ গবেষনার কাজে লাগে তাহলেও অনেকে ডাক্তারি পড়ুয়ারা উপকৃত হবে। এদিকে রাজ্য এনএস এসের জলপাইগুড়ি জেলার নোডাল অফিসার তথা সূর্যসেন মহাবিদ্যালয়ের এনএসএসের ইউনিট দুইয়ের প্রোগ্রাম অফিসার ববিতা প্রসাদ জানান আমাদের পড়ুয়ারা বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক কাজ করে থাকে। সম্প্রতি ৫০জন পড়ুয়া চক্ষু দানের অঙ্গীকার বদ্ধ হয়েছে।এরপর এই তিন পড়ুয়া দেহ দানের কথা আমাকে জানায়। তারা নিজেরাই যথেষ্ট সক্রিয় এবং এই পড়ুয়ারা তাদের পরিবারকেও এ ধরনের কাজে উদ্বুদ্ধ করেছে। তাদের অনুপ্রেরণায় আরো বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী এগিয়ে এসেছে। এদিকে অনুরক্তির এই যাত্রায় শরিক হয়েছে তার পরিবারও। তার কাকা ও পরিবারের সদস্যরা চোখ ও দেহ দানে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে। পোড়াঝাড়ের বাসিন্দা কলা বিভাগের ছাত্র মনোজ বলে প্রথমে পরিবারের সদস্যদের নানা বিভ্রান্তি ছিল। তাদের বোঝাঁতে হয়েছে। এখন তারাও বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বক্তব্য এভাবে ছাত্রছাত্রীরা এগিয়ে এলে সমাজের কিছু ভুল ভ্রান্ত ধ্যান ধারণার সহজেই বদল হবে।