পরপর দুই বইমেলা মিলে উত্তরে পাঁচ কোটির বই বিক্রি। খুশি প্রকাশনা সংস্থা। পঞ্চাশ হাজারের বেশি পাঠকেরর জমায়েতে ভরপুর বইমেলা প্রাঙ্গণ।
শিলিগুড়ি। পরপর দুই বইমেলা মিলে উত্তরে পাঁচ কোটির বই বিক্রি। খুশি প্রকাশনা সংস্থা। পঞ্চাশ হাজারের বেশি পাঠকেরর জমায়েতে ভরপুর বইমেলা প্রাঙ্গণ। ডিজিটাল প্রিন্ট, ই বুকের জ্বরের মাঝেই ভালো সাড়া উত্তরের লেখক লেখিকাদের বই থেকে বাংলা, ইংরেজি সাহিত্য, বিজ্ঞান ভিত্তিক বই ঘিরে। শীতের শুরুতেই শিলিগুড়ি শহরের কেন্দ্র স্থলে দুই বই মেলা ঘিরে বইমুখী শহর বাসী।জেন জি থেকে জেন আলফার মাঝে ইংরেজী বইয়ের দেদার বিক্রয়। ভালো বিক্রয় হয়েছে বাংলা বই প্রকাশনীর সংস্থাগুলির স্টলেও। শিলিগুড়ি পরপর দুই বইমেলা ঘিরে নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি অব্দি বই প্রেমীদের নিয়ে এক অন্য উন্মাদনায় মেতে ওঠে শহর। ৩০ শে নভেম্বর থেকে ৬ ই নভেম্বর পর্যন্ত চলে শিলিগুড়ি বাঘাযতীন ময়দানে শিলিগুড়ি মহকুমা কৃত্যক কর্তৃক সরকারি বইমেলা। এই বইমেলায় এবারে ৬২টির বেশি প্রকাশনী সংস্থা তাদের বইয়ের পসরা নিয়ে শামিল হয়। যেখানে ইংরেজি হিন্দি থেকে শুরু করে প্রায় বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার বিপুল বইয়ের সম্ভার ছিল। তার সঙ্গে চাকুরী ও প্রতিযোগিতামূলক বই এর সম্ভার ছিল বিভিন্ন প্রকাশনী সংস্থার স্থলে। জেলা সহায়ক গ্রন্থাগার আধিকারিক সৈকত গোস্বামী জানান এবারের সরকারি বইমেলা পাঠকদের চোখে অনেক বেশি আকর্ষণীয় করে তোলা হয়। স্টলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল বিগত বছর গুলির তুলনায়। এবারে ৭০ থেকে ৮০ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। জানা যাচ্ছে যা সরকারি বইমেলার ক্ষেত্রে আয়ের অংক বিগত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। বিগত বছর বই বিক্রি হয়েছিল ৪০ লাখের কাছাকাছি। সরকারি নির্দিষ্ট তহবিল থেকে মহকুমার ২৮ টি মোট লাইব্রেরীর মধ্যে ২৫ টি লাইব্রেরী বই ক্রয় করেছে। তিনটিলাইব্রেরী দূর্গম এলাকা, গ্রন্থাগারিকের অনুপস্থিতি এ ধরনের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধের মুখে রয়েছে। ফলে সরকারি বই ক্রয়ের তহবিল ব্যবহার করা যায়নি। অন্যদিকে শিলিগুড়ি কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে উত্তরবঙ্গ গ্রেটার শিলিগুড়ি পাবলিশার্স এন্ড বুক সেলার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে উত্তরবঙ্গ বইমেলা এবারে ৪৩তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। উত্তরবঙ্গের মধ্যে বৃহত্তম এই বইমেলা।
ফলে কম বেশি উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন জেলার পাঠকদের ভিড় জমে এই বইমেলা প্রাঙ্গনে। এবারে এই বইমেলায় সাড়ে চার কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে বইমেলা কমিটির। এবারে এই বইমেলায় ৯৪ টি প্রকাশনী সংস্থার স্টল ছিল স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণ জুড়ে। বইমেলা কমিটির দাবি ইংরেজি বইয়ের ব্যাপক বিক্রি হয়েছে বইমেলায়। তবে অপেক্ষাকৃত বাংলা বইয়ের বিক্রি কিছুটা কম। যদিও পাঠকদের চিন্তাধারা নয় এর পেছনে সরকারি বইমেলা সদ্য সমাপন হতেই ৭ই ডিসেম্বর থেকে পুরোদস্তুরে দশ দিনব্যাপী ১৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত এই বইমেলায় চলায় তার প্রভাব পড়েছে। দুই বইমেলা থেকেই চাকুরী মুখী প্রতিযোগিতামূলক বই বিক্রির হার সর্বাধিক। ইংরেজি বইয়ের বিক্রীও বিগত কয়েক বছরে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। উত্তরবঙ্গ বইমেলায় বহু নতুন লেখকদের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে এবারে এবং তাদের বইও ভালো বিক্রি নজরে আসে। তবে পরপর শহরে বইমেলার মাঝে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধান থাকলে এই বিক্রি আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে কিছুটা আক্ষেপ মিশিয়ে জানাচ্ছে উত্তরবঙ্গ বইমেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মধুসূদন সেন। তাদের দাবি সরকারি বইমেলায় প্রচুর বাংলা বইয়ের বিক্রি হয়েছে ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই বইমেলায় সে বিক্রির হার কিছুটা কমেছে। একই প্রকাশনী সংস্থা দুই মেলায় অংশ নিয়েছে। পরবর্তীতে এই দুই বই মেলার মাঝে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধান রাখার আবেদন জানানো হয়েছে মেয়র গৌতম দেবকে বইমেলা কমিটির তরফে।