বিশ্বখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী অরিজিৎ সিং-এর কনসার্টের আয়োজক সংস্থার ভূমিকা প্রশ্নের মুখে!শুরুতেই আয়োজক কর্তাদের বিরুদ্ধে উঠছে অনিয়মের অভিযোগ। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমোদন না নিয়েই কাঞ্চনঝঙ্ঘা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠান স্থল হিসেবে ঘোষণা উদ্যোক্তাদের।
শিলিগুড়ি। অরিজিৎ সিং-এর কনসার্টের আয়োজক সংস্থার ভূমিকা নিয়ে বড় প্রশ্ম। শুরুতেই আয়োজক কর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমোদন না নিয়েই কাঞ্চনঝঙ্ঘা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠান স্থল হিসেবে ঘোষণা উদ্যোক্তাদের। শিলিগুড়ি কাঞ্চনঝঙ্গা স্টেডিয়ামের কনসার্ট আয়োজনের জন্য এখনও পর্যন্ত শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশ ও শিলিগুড়ি পুরনিগমের তরফে আয়োজক সংস্থাকে কোনরকম অনুমোদন দেওয়া হয়নি।এমনকি
শিলিগুড়ি কাঞ্চনঝঙ্গা স্টেডিয়ামে লাইভ কনসার্টের বিষয়ে আয়োজক সংস্থার তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো পর্যন্ত হয়নি পুলিশকে। শিলিগুড়ি পুরনিগমের তরফেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম মাঠ ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। পুরনিগমের দাবি আমরা কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম মাঠ কনসার্টের জন্য এখনও চূড়ান্ত করিনি। শুক্রবার স্টেডিয়ামে কমিটির সঙ্গে একটা বৈঠক আছে, সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অথচ কনসার্ট আয়োজক সংস্থা ডিএস এন্টারটেইনমেন্ট-এর তরফে গত বুধবার সংবাদমাধ্যমে ‘কাঞ্চনঝঙ্গা স্টেডিয়ামে’ লাইভ কনসার্টের হতে চলেছে তা ঘোষণা করা হয়েছে। ৩রা মার্চ থেকে শ্রোতারা অনলাইনে টিকিট ক্রয় করতে পারবেন তাও জানানো হয়েছে। যা ঘিরে আয়োজক সংস্থার ভূমিকায় প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ ও প্রশাসনিক তরফে অনুষ্ঠানস্থলের অনুমোদন মেলার আগে কিভাবে টিকিট ছাড়ছে সংস্থা? এত বড় মাপের একজন সঙ্গীতশিল্পীর কনসার্টের অনুষ্ঠানস্থল (ভেন্যু) নিয়ে কি করে এতটা উদাসীন হতে পারে আয়োজক সংস্থা? কারন অরিজিৎ সিং এর মতো সঙ্গীত শিল্পীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তার একটা বড় বিষয় রয়েছে। এ ধরনের অনুষ্ঠানের স্টারেদের অনুষ্ঠানস্থল কতটা নিরাপদ তা যাচাই করে পুলিশ। অথচ শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার অখিলেশ কুমার চতুর্বেদী বলেন “এখনও পর্যন্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানের বিষয়ে উদ্যোক্তারা দপ্তরিয়ভাবে কোনরকম কিছুই জানায়নি।” অনুষ্ঠান স্থল ঘোষণার আগে আয়োজক সংস্থার তরফে অনুমতি নেওয়া হয়নি স্থানীয় শিলিগুড়ি থানারও। অথচ উদ্যোক্তারা সংবাদমাধ্যমের সম্মুখে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতার দাবি করেছেন। মূলত শিলিগুড়ি শহরের কেন্দ্রস্থলে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠান হলে গোটা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থায় বদল আনতে হবে। এদিকে আয়োজক সংস্থার অনিয়মের জটে বিস্তর বিভ্রান্তিতে শিলিগুড়ি পুরনিগমও।
কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বে থাকা পুরনিগমের ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ বিভাগে আয়োজক সংস্থার তরফে লিখিতভাবে অনুষ্ঠানের অনুমতির জন্য আবেদনই জানানো হয়নি। জানা গিয়েছে কলকাতায় বসে সংস্থার এক কর্তা পুরো বিষয়টি দেখছেন। তিনি বেশ কয়েক মাস আগে পুরোনিগমের মেয়রের সঙ্গে মৌখিক বার্তালাপ সেরে গিয়েছেন। পুরনিগমের ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ বিভাগের মেয়র পারিষদ দিলীপ বর্মন বলেন- মৌখিকভাবে কি কথা হয়েছে আমি জানিনা। তবে স্টেডিয়ামে ব্যবহার নিয়ে আমার দপ্তরে লিখিত আকারে আবেদন জমা পড়েনি। দিলীপ বাবুর বক্তব্য মেয়র গৌতম দেবের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে আমার, তিনি বলেছেন স্টেডিয়াম ও গ্যালারি কি অবস্থায় রয়েছে তা জানতে পূর্ত দপ্তরের বিশেষজ্ঞদের টিম দিয়ে সমীক্ষা করা হবে। সমীক্ষার পরই স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠানের অনুমতির বিষয়টিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে পুরনিগম। এখনও পর্যন্ত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানের কোনোরকম অনুমতি দেওয়া হয়নি পুরোনিগমের তরফে তা সাফ জানান পুরনিগমের কমিশনার সোনাম ওয়াংদি ভুটিয়া। তার মন্তব্য- আলোচনা চলছে। তবে এখনও মাঠে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়নি। শুক্রবার স্টেডিয়াম কমিটির সঙ্গে বৈঠক রয়েছে সেখানেই এসডিও এবং কমিটির অন্যান্যদের উপস্থিতিতে একটা সিদ্ধান্তে আসবে পুরনিগম। স্টেডিয়াম কমিটিও মাঠে কনসার্ট এর বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি।
অথচ কোনরকম অনুমোদন ছাড়াই বিভ্রান্তিকে জিইয়ে রেখে সংস্থার তরফে বুধবার সংবাদমাধ্যমে এবং সোশ্যাল মাধ্যমে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে কনসার্টের অনলাইন টিকিট অপশন খুলে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। স্টেডিয়াম মাঠেই ১৪ হাজার শ্রোতার টার্গেট স্থির করে ফেলেছে সংস্থা। যা নিয়েও আশঙ্কা তৈরী হয়েছে। পুরনিগমের সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের গ্যালারি সমেত দর্শক ধারনের সংখ্যা ২০ থেকে ২৫ হাজার। শুধুমাত্র স্টেডিয়াম মাঠের ভেতর ১৪ হাজার শ্রোতার টার্গেট হলে চাপ বাড়তে পারে। কিন্তু বর্তমানে স্টেডিয়ামের গ্যালারির যা অবস্থা তাতে ঝুঁকিপূর্ণ বলেই দাবি পুরোনিগমের। ফলে খুব জোড় হলে গ্যালারির একটা অংশে একবারে হাতে গোনা কিছু দর্শকাসনের জন্য মিললেও মিলতে পারে। তবে গ্যালারির অধিকাংশটাই ফাঁকা রাখতে হবে।